কলকাতা: ওপারে অশান্তি। প্রতিদিন একের পর ঘটনা। রাজ্যে একের পর এক জঙ্গির গ্রেফতারির আবহে সদা সতর্ক বিএসএফ। সীমান্তে বেড়েছে তৎপরতা। বসানো হয়েছে বাড়তি সিসি ক্যামেরা। তারপরও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।
অশান্ত বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা, মারধর, হিংসার, আঁচ এসে পড়েছে এপারেও। যা সবথেকে বেশি টের পাচ্ছেন সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। পেট্রাপোলের বাসিন্দা পারভিন বিবি বলেন, "একটা সময় আমরা যেতাম, ওরা আসত। এখন সব বন্ধ। কেউ যাতায়াত করে না।'' যে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন, আজ সেই দেশ ভারত-বিদ্বেষের বিষ ছড়াচ্ছে। দুদেশের মধ্য়ে পাল্টে যাওয়া সম্পর্ক দুশ্চিন্তায় রেখেছে সীমান্তবর্তী এলাকার বহু মানুষকে। কালিয়ারির বাসিন্দা দীপক ঘোষ বলেন, "বাংলাদেশের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য সব বন্ধ, আমরা আতঙ্কে থাকি। ওখানে যা হচ্ছে। বিএসএফ থাকলেও আতঙ্ক কাজ করে।''
বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম পিরোজপুর, পেট্রাপোল, জয়ন্তীপুর, কালিয়ারিতে এখন বিএসএফের তৎপরতা বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টা কড়া পাহারা। বসানো হয়েছে বাড়তি সিসি ক্যামেরা, নাইট ভিশন ক্যামেরাও। ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা গোপাল মণ্ডল বলেন, "ওপারে সাঁতরে আসত, এখানে কাজ করত। আমরাও ওপারে গিয়ে অনুষ্ঠানে যেতাম। এখন কেউ ভাল নেই, ইনি ৭১ যুদ্ধ দেখেছেন। কালিয়ারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, "নজরদারি বেড়েছে, ক্যামেরা বেড়েছে। তবু আতঙ্ক।''
অশান্ত বাংলাদেশে নৈরাজ্যের গুচ্ছ গুচ্ছ ছবি ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এই প্রেক্ষিতে, আক্রান্ত হিনদু পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করল, রাষ্ট্রপুঞ্জ অনুমোদিত, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি দল। চট্টগ্রামের সেবক কলোনি ও হরিজন কলোনিতে যান তারা। কথা বলেন আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে। তাঁদের সামনে ক্ষোভের কথা তুলে ধরে হিন্দু পরিবারগুলি। ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, "আমার ছেলে চাকরি থেকে আসছিল। ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করে আমার ছেলে। আমার ছেলেকে অনেক মারধর করেছে, অনেক মারধর করার পর, আমার ছেলের অনেক রক্ত বেরিয়েছে। কিন্তু, আমার ছেলেকে আর দেখিনি।'' মিথ্যে মামলায় বাংলাদেশ পুলিশ হিন্দুদের ফাঁসাচ্ছে বলে অভিযোগ করে বাংলাদেশের এই পরিবারগুলো। সূত্রের খবর, এদিন চট্টগ্রামে খুন হওয়া আইনজীবীর বাড়িতেও যান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ঘুরে দেখেন ভাঙা মন্দির, আক্রান্ত হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি।