কেনিয়ায় প্রবল বর্ষণের ফলে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে কেনিয়ায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যার কারণে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে সৃষ্ট ভূমিধসে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে আরো বহু মানুষ আহত এবং বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।
কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কিসুমু অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি এলাকায় শুক্রবার রাতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এই এলাকার বেশ কিছু গ্রাম ভূমিধসে চাপা পড়েছে, যেখানে শতাধিক মানুষ বসবাস করতেন। উদ্ধারকর্মীরা কাজ শুরু করলেও, বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উদ্ধারকাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো কেনিয়াতেও প্রতি বছর বর্ষাকালে ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়ে যায়, কিন্তু এবার ধসের ঘটনা তীব্রতা ও ব্যাপকতার দিক দিয়ে কিছুটা ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি এলাকার অস্থিতিশীল ভূমি এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটানোর মূল কারণ।
কেনিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (NDMA) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিধসের কারণে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসন আপৎকালীন আশ্রয় ও খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে উদ্ধারকাজের জন্য আরও সময় প্রয়োজন, এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও সম্পদের প্রয়োজন।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা যেন একসঙ্গে এই দুঃসময়ে দেশবাসীকে সহায়তা করতে পারি, এবং সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।"
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই এলাকার অনেকেই পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করতে গিয়ে নিয়মিত ভূমিধসের ভীতি পোহাচ্ছিলেন, কিন্তু এবারের ধস ছিল অনেক বড় এবং ভয়াবহ। তারা জানান, বৃষ্টির কারণে স্থানীয় রাস্তাগুলোও খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, যার ফলে সঠিক সময়ে উদ্ধারকাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলি এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতির পরিমাণ কমাতে এবং আহতদের চিকিৎসা সরবরাহ করতে দ্রুত সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং আন্তর্জাতিক উদ্ধারকারী দলগুলি ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আরও প্রস্তুতি গ্রহণের উপর গুরুত্ব আরোপ করছে, বিশেষ করে ভূমিকম্প এবং ভূমিধসের মতো ঘটনা মোকাবেলায়।
এছাড়া, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য দ্রুত পরিবেশবান্ধব স্থিতিশীল ভূমির উন্নয়নে কাজ শুরু করার দাবি উঠেছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।