চাবাহারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করতে ‘ট্রাম্প কার্ড’ আমেরিকার?


প্রথমে ইরানের চাবাহার বন্দর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। তার পর সবাইকে চমকে দিয়ে ১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি। হঠাৎ করেই যেন ভারতের উপর অতিরিক্ত সদয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এর মাধ্যমে নয়াদিল্লির সঙ্গে যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন আমেরিকার বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে একটি বিষয়কেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। আর সেটা হল বাণিজ্যচুক্তি। ওয়াশিংটনের ইতিবাচক মনোভাবে এই বিষয়ে জট কাটতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞেরা ট্রাম্পের ভারত-প্রেমের নেপথ্যে একাধিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, এর মাধ্যমে চিন এবং ইরানের উপর চাপ তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। তার জন্য নয়াদিল্লির সামনে নিজের ভাবমূর্তি ‘ভাল’ করার প্রয়োজন ছিল তাঁর। দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে অপরিশোধিত তেলের বাণিজ্য বৃদ্ধির চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাতে সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপগুলি যে অনুঘটকের কাজ করবে, তা বলাই বাহুল্য।

চলতি বছরের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ‘রিপাবলিক অফ কোরিয়া’ বা আরওকে (পড়ুন দক্ষিণ কোরিয়া) সফর করেন ট্রাম্প। সেখানে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় তাঁর। এর পরই দু’তরফে বাণিজ্যচুক্তি হয়েছে বলে নিজের সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ঘোষণা করে দেন ‘পোটাস’ (প্রেসিডেন্ট অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস)। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এ ব্যাপারে এখনও মুখ খোলেনি বেজিং। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের কতটা লাভ হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী দিনে আমেরিকার থেকে বিপুল পরিমাণে সোয়াবিন কিনবে চিন। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র পাবে সেখানকার বিরল খনিজ বা রেয়ার আর্থ মিনারেল্‌স। ওই গুরুত্বপূর্ণ ধাতুগুলির আমেরিকায় রফতানি একরকম বন্ধ করে রেখেছে বেজিং। সংশ্লিষ্ট চুক্তিটির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ড্রাগন প্রেসিডেন্ট শি বলেন, দেশে ফিরে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। ফলে দু’তরফে বিরল খনিজের ব্যাপারে জট কতটা কাটল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post