সাসপেন্ডেড তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্যে ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। শনিবার বাবরি মসজিদের শিলান্যাস পর্ব মিটতেই ফের হুঙ্কার ছুঁড়লেন ভরতপুরের বিধায়ক। 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবার ক্ষমতায় ফিরতে দেব না', বিরাট মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। তাঁর দাবি, “তৃণমূলের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ফিনিশ… পিকচার এখনও বাকি আছে।”
শনিবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় প্রস্তাবিত ‘বাবরি মসজিদ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে ক্রমাগত তৃণমূলকে নিশানা করেছেন হুমায়ুন কবীর। এদিন এক সাক্ষাৎকারে কবির জানান, "২২ ডিসেম্বর তিনি নিজের রাজনৈতিক দল গঠন করবেন। পাশাপাশি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম-এর সঙ্গে জোট গড়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ISF, কংগ্রেস, সিপিএমও জোটের শরীক হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। হুমায়ুন দাবি করেছেন, আগামী নির্বাচনে ২৯৪টির মধ্যে ১৩৫ আসনে প্রার্থী দেবেন তিনি এবং যেটা বাংলার রাজনীতিতে “গেম-চেঞ্জার” হয়ে উঠবে"।
কবির বলেন, “মুসলমানদের জন্য কাজ করবে এমন একটি নতুন দল গঠন করব। ১৩৫ আসনে লড়ব। এআইএমআইএমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ওয়েইসির সঙ্গেও কথা হয়েছে।” তৃণমূলের পাশাপাশি রাজ্যে বিজেপির 'উত্থানও' কবিরের মাথাব্যথার কারণ। কবিরের দাবি, “বিজেপিকেও বাংলায় ক্ষমতায় আসতে দেব না। তৃণমূলও সরকার গঠন করতে পারবে না।” তাঁর আরও দাবি,বাবরি মসজিদ নির্মাণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু শিল্পপতি তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।
তৃণমূল নেতৃত্ব কবিরকে সাসপেন্ড করে জানিয়েছে, দল ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শে বিশ্বাসী। অন্যদিকে বিজেপি অভিযোগ করেছে, মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ আসলে বাংলায় ভোটের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তৃণমূলের অন্যতম প্রধান ভোটব্যাঙ্ক মুসলিম সম্প্রদায়। আর সেই ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানোর হুমকি দিয়েছেন কবির। শনিবার বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম লক্ষ্য করা গিয়েছে। কবিরের দাবি, পুলিশের সহযোগিতা ছাড়াই আট লক্ষ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ইট ও নগদ দানে ভরে গিয়েছিল এলাকা। মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, এমনকি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থেকেও ট্রাক-ট্র্যাক্টরে ইট নিয়ে আসেন বহু মানুষ।