দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে৷ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এ দিন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি৷ কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র নিজেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে কাজ করেন৷ ফলে তাঁর গ্রেফতারি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ৷
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত গোপাল দলপতি, তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষদের মুখে প্রথম কালীঘাটের কাকুর কাছে টাকা পাঠানোর কথা শোনা যায়৷ তাঁর নাম সামনে আসার পরই সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেছিলেন, তিনি যেহেতু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে কাজ করেন সেই কারণেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে৷
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কালীঘাটের কাকুর নাম উঠে এসেছিল৷ অভিযোগ ছিল, বেআইনি নিয়োগের জন্য তোলা টাকার একটা অংশ কালীঘাটের কাকুর কাছে যেত৷ এর পরেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র নামে ওই ব্যক্তিকে ডেকে পাঠায় সিবিআই৷ নিজাম প্যালেসে ডেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে৷ এবার সেই কালীঘাটের কাকুর বাড়িতে গেল ইডি৷ যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র৷
গত ২০ মে সুজয়কৃষ্ণের বেহালার বাড়ি, অফিস সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি৷ সেই তল্লাশিতে সুজয়কৃষ্ণের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছিল। যা তাঁর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন। তল্লাশিতে সুজয়কৃষ্ণে বাজেয়াপ্ত হওয়া মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্য দেখিয়েও এ দিন সুজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরে আজ তলব করা হয় তাঁকে৷ এ দিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ইডি দফতরে পৌঁছন সুজয়কৃষ্ণ৷
সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির সম্পর্ক খুঁজতে গিয়ে তিনটি সংস্থারও খোঁজ পেয়েছিলেন ইডি-র তদন্তকারীরা৷ অভিযোগ, এই সংস্থাগুলির সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের প্রত্যক্ষ যোগের প্রমাণও পেয়েছেন ইডি কর্তারা৷ এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা সাদা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তদন্তকারীদের৷ যদিও জিজ্ঞাসাবাদে এই সংস্থাগুলির সঙ্গে কোনওরকমের যোগ অস্বীকার করেছেন সুজয়কৃষ্ণ৷ এ ছাড়াও নিজের এবং স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা লেনদেন সম্পর্কেও সুজয়কৃষ্ণ বিভ্রান্তিকর জবাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ ইডি-র৷ তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরেও সুজয়কৃষ্ণের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে গোটা বিষয়টি দিল্লিতে ইডি-র শীর্ষ আধিকারিকদের জানানো হয় কলকাতার দফতর থেকে৷ দিল্লি থেকে সবুজ সঙ্কেত আসার পরই সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে ইডি৷