খবর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক : আরজি কর কাণ্ডের আবহে ধর্ষণের মামলায় কঠোরতম শাস্তি দিতে নতুন বিল এনেছে রাজ্য। ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’য় কেন্দ্রীয় সরকারের পৃথক আইন থাকলেও রাজ্য সরকার চায়, আরও কড়া আইন কার্যকর করতে। বিরোধীরা অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন্দ্রীয় আইন থাকা সত্ত্বেও, কেন পৃথক বিল আনছে রাজ্য। মঙ্গলবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে ‘অপরাজিতা ওমেন অ্যান্ড চাইল্ড সংশোধনী বিল’ পেশ করা হয়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাখ্যা করেন, নতুন বিলে কী কী পরিবর্তন করা হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, নতুন বিলের তিনটি তাৎপর্য রয়েছে। বর্ধিত শাস্তি, দ্রুত তদন্ত ও দ্রুত ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন আইন সুনিশ্চিত করবে, যৌন নির্যাতনে কঠোরতম শাস্তি যাতে হয়। ন্যায় সংহিতায় শাস্তির কথা বলা আছে। তবে আমাদের আইনে তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
পরিবর্তনগুলি একে একে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী-
১. ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ১০ থেকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথা বলা আছে, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। অপরাজিতা বিলে বলা হয়েছে, এই অন্যায়ের ক্ষেত্রে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি, অপরাধ গুরুতর হলে মৃত্যুদণ্ড।
২. নির্যাতিতার মৃত্যু হলে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তির কথা বলা আছে- ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। বাংলার নতুন অপরাজিতা বিলে সেই শাস্তি বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রাণদণ্ড ও জরিমানা।
৩. অ্যাসিড আক্রমণের ক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তি হিসেবে বলা আছে, ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা। বাংলার নয়া বিলে বলা হয়েছে, অ্যাসিড হামলায় অপরাধীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে প্রাণদণ্ডের শাস্তি হবে।
এছাড়া, দ্রুত তদন্তের জন্য অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স গঠন করার কথা বলা হয়েছে বিলে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিল পাশ হলেই পুলিশ বাহিনী তৈরি করা হবে। প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পর ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে। ১৫ দিন বাড়ানো যেতে পারে। নির্যাতিতা শিশু হলে সাক্ষ্য সংগ্রহ হবে ৭ দিনের মধ্যে। এছাড়া, চার্জশিট শেষ হওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে ট্রায়াল শেষ করতে হবে।