একের পর এক ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল নিচ্ছেন, তাতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন। আর সেই পুড়ে যাওয়া টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে দিচ্ছেন স্ত্রী। এ ভাবে ২০ লক্ষ টাকা পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করলেন পটনার এক সরকারি ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তল্লাশি চালিয়ে আরও ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং আর্থিক দুর্নীতিদমন শাখা।
আয়-বহির্ভূত সম্পত্তির মামলায় এক ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল আর্থিক দুর্নীতিদমন শাখা। বাড়িতে তল্লাশি হতে পারে, আগেই আঁচ পেয়েছিলেন পটনার গ্রামীণ উন্নয়ন দফতরের ইঞ্জিনিয়ার বিনোদ কুমার রায়। ধরা পড়ার ভয়ে তিনি ঘরে রাখা ৫০০ টাকার তাড়া তাড়া বান্ডিল পুড়িয়ে ফেললেন। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় ২০ লক্ষ টাকা পুড়িয়ে ফেলেছেন ইঞ্জিনিয়ার। ঘর থেকে আধজ্বলা ৫০০ টাকার বেশ কয়েকটি বান্ডিল উদ্ধার হয়েছে।
তদন্তকারীরা পুরো বাড়ি তল্লাশি চালান। তাঁরা জানিয়েছেন, শুধু একটি ঘর থেকেই কয়েক লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও জলের ট্যাঙ্কে লুকোনো ছিল টাকা, জলের পাইপের ভিতর থেকেও টাকা উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নগদ ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। তবে বাড়ির আর কিছু জায়গায় টাকা লুকোনো থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নগদ টাকা ছাড়াও কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি, দামি গাড়ি, ঘড়ি এবং সোনা, রুপোর বিপুল পরিমাণ গয়না উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, তল্লাশি অভিযান করতে গেলে বাধা দেন ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার সময় তল্লাশি অভিযানে যায় আর্থিক দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকেরা। কিন্তু গেটের বাইরে তাঁদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখার পর গেট খোলেন ইঞ্জিনিয়ার। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, যে সময় তাঁদের বাইরে অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়েছিল, সেই সময় ইঞ্জিনিয়ার টাকার বন্ডিল পোড়াচ্ছিলেন। তার পর সেগুলি কমোডে ফ্লাশ করে দেন। পুরো টাকা সরানোর সুযোগ পাননি। ২০ লক্ষ টাকা পোড়াতে পেরেছিলেন। তার মধ্যে কিছু বান্ডিল আধপোড়া অবস্থায় শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়। বাকি ৪০ লক্ষ টাকা বাড়ির ছাদে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন ইঞ্জিনিয়ার। সেখান থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়। আধপোড়া টাকাগুলি পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক দল নিয়ে আসা হয়। পুরনিগমের লোকজন ডেকে শৌচালয় থেকে আধপোড়া টাকা উদ্ধার করা হয়।