সাজঘরে ফিরে জ্ঞান হারিয়েছিলেন শ্রেয়স! আইসিইউ থেকে বার করা হলেও ভারতীয় ব্যাটারকে নিয়ে অন্য এক চিন্তায় চিকিৎসকেরা


আইসিইউ থেকে বার করা হয়েছে শ্রেয়স আয়ারকে। স্থিতিশীল রয়েছেন তিনি। রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু অন্য এক চিন্তা ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। সেটি হল সংক্রমণের আশঙ্কা। কোনও ভাবেই যাতে ক্ষতস্থান থেকে সংক্রমণ না ছড়ায় সে দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। শ্রেয়সের সঙ্গে সবসময় রয়েছেন বোর্ডের চিকিৎসক রিজ়ওয়ান খান। জানা গিয়েছে, আপাতত সাত দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটারকে।

শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিডনিতে শেষ ম্যাচে অ্যালেক্স ক্যারের ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পান শ্রেয়স। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সাজঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে মনে হয়েছিল, সাধারণ চোট পেয়েছেন শ্রেয়স। কিন্তু সাজঘরে ফিরে দলের ফিজিয়ো ও চিকিৎসক বুঝতে পারেন, পরিস্থিতি তার চেয়ে বেশি জটিল।

সূত্রের খবর, সাজঘরে ফিরে জ্ঞান হারান শ্রেয়স। তাঁর রক্তচাপ হঠাৎ অনেকটা নেমে গিয়েছিল। অন্য কিছু সমস্যাও শুরু হয়েছিল। ফলে আর সময় নষ্ট করেননি বোর্ডের ফিজিয়ো ও চিকিৎসক। সঙ্গে সঙ্গে শ্রেয়সকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ভর্তি করানো হয় আইসিইউ-তে।

‘ক্রিকবাজ়’ জানিয়েছে, শ্রেয়স আপাতত বিপন্মুক্ত। মাটিতে সজোরে ধাক্কা খাওয়ার জন্যই রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মনে করা হয়েছে। সর্ব ক্ষণ শ্রেয়সের পাশে থাকার জন্য বোর্ডের তরফে চিকিৎসক রিজ়ওয়ান খানকে রেখে দেওয়া হয়েছে। বাকি দল ক্যানবেরায় চলে গিয়েছে।

শ্রেয়সের পাশে থাকার জন্য তাঁর কিছু বন্ধুও সিডনির হাসপাতালে পৌঁছেছেন। ভিসা সমস্যা মিটলে তাঁর পরিবারেরও দ্রুত সিডনি পৌঁছে যাওয়ার কথা। নতুন সপ্তাহ সবে শুরু হওয়ায় ভিসা পেতে দেরি হচ্ছে তাঁদের। বোর্ডও চেষ্টা করছে, দ্রুত শ্রেয়সের পরিবারের ভিসা সমস্যা মেটাতে।

ছেলের পাশে থাকতে চাইছেন বাবা সন্তোষ আয়ার এবং মা রোহিনী আয়ার। তাঁরা জরুরি ভিসার আবেদন করেছেন। বিসিসিআইয়ের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘ওঁদের যত দ্রুত সম্ভব অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর সমস্ত চেষ্টা করা হচ্ছে। বাবা-মা দু’জনেই যেতে পারবেন কি না, এখনও নিশ্চিত নয়। তবে হাসপাতালে শ্রেয়সের কাছে পরিবারের কারও এক জনের থাকা প্রয়োজন। রবিবারই শ্রেয়সের বোনের সিডনি যাওয়ার কথা ছিল। কাগজপত্রের কাজও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শ্রেয়সের বাবা-মায়ের এক জন তাঁর সঙ্গে যাবেন। তাই শ্রেয়সের বোন রবিবার যেতে পারেননি।’’

শ্রেয়স কবে দেশে ফিরবেন তা এখনও অনিশ্চিত। বোর্ড, ভারতীয় দল, শ্রেয়সের পরিবার— কেউই তাঁকে দ্রুত দেশে ফেরাতে রাজি নয়। তাই আগামী কয়েক দিন তাঁকে সিডনিতেই রাখা হতে পারে। পুরোপুরি সুস্থ হলে তবেই দেশের বিমান ধরবেন তিনি।

বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল দল একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘শ্রেয়সের চোটের জায়গার স্ক্যান করানো হয়েছে। ওর প্লীহায় ক্ষত দেখা গিয়েছে। চিকিৎসা চলছে। শ্রেয়সের পরিস্থিতি স্থিতিশীল। উন্নতিও হয়েছে কিছুটা। সিডনি এবং ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে সমানে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে। তাঁদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় দলের চিকিৎসক শ্রেয়সের সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিস্থিতি জানাচ্ছেন।’’

বুধবার থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজ় শুরু হবে। ফলে গৌতম গম্ভীর, শুভমন গিলেরা ক্যানবেরায় চলে গিয়েছেন। আপাতত কুড়ি-বিশের ক্রিকেটের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত তাঁরা। শ্রেয়স অবশ্য ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন না। ফলে দলে বদলের কোনও প্রয়োজন পড়েনি।

Post a Comment

Previous Post Next Post