বেসমেন্টে দেহের স্তূপ! গোয়ার নাইটক্লাবে মৃত্যুকূপ এটাই, কেন? হাড়হিম করা ঘটনা সামনে


শনিবার রাতে বাগা সমুদ্রসৈকতের কাছের জনপ্রিয় নাইটক্লাবে পার্টিতে মগ্ন ছিল সবাই। মঞ্চে চলছিল বেলি-ডান্স। শনিবাসরীয় সন্ধেয় তখন সকলে মগ্ন ছিলেন বিনোদনে। অভিযোগ, আতসবাজির খেলা শুরু হতেই ঘটে সর্বনাশ। আগুন ছুঁয়ে ফেলে কাঠের সিলিং। তারপরই হু হু করে ছড়়িয়ে পড়ে পুরো ক্লাবে।

মুহূর্তের মধ্যে ক্লাবটি ধোঁয়ায় ঢেকে যায় (Goa nightclub fire) । ঠিক তখনই শুরু হয়ে যায় প্রাণপণে দৌড়। বহু মানুষ ভিড়ে ঠাসা সরু পথে বেরোনোর চেষ্টা করে। আর তাতেই ঘটে যায় বড় বিপদ। সেখানে ধোঁয়া বেরনোর রাস্তাই ছিল না। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান পরপর ২৩ জন। বলছে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্য়ু হয়েছে ২৫জনের, আহত হয়েছেন একাধিক।

এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা ছিল যে, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লাগতে পারে। তবে প্রত্য়ক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, দুর্ঘটনার আগে সেখানে আতশবাজিই পোড়ানো হচ্ছিল। দমকল সূত্রে দাবি, ঘটনায় বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়ে। পুলিশ সূত্রে দাবি, মৃতদের মধ্যে ৫জন পর্যটক এবং বাকিরা কর্মী। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে সকলের দেহই শনাক্ত করা গিয়েছে

এক কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, নাইটক্লাবটির কাছে দমকল বিভাগের NOC ছিল না। এমনকী অনুমতি ছিল না মদ বিক্রিরও। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, নাইটক্লাবটির ২ মালিকের বিরুদ্ধে FIR করা হয়েছে। গোয়ার মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং যারা নিয়ম লঙ্ঘনে সহায়ক, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে । দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। নিঃসন্দেহে গোয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আগুনে আটকে গিয়েছিল প্রধান প্রস্থান পথ। পালানোর জন্য মরিয়া হয়ে একটি সরু সিঁড়ি দিয়ে বেসমেন্টের দিকে ছুটে যান। তবে, বেসমেন্টে কোনও বায়ুচলাচল ছিল না ।ফলে শ্বাসরোধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, বেসমেন্টে ২৩ জন মারা গেছেন। সেখানে একটার ওপর একটা দেহ পড়ে ছিল। সিঁড়ি থেকে আরও দুটি পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সমস্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় লেগেছে।

মৃতদের মধ্যে দিল্লির এক পরিবারের চারজন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন মহিলা এবং কর্ণাটকের এক পর্যটক রয়েছেন। পাঁচজন পর্যটক ছাড়া, নিহতদের বেশিরভাগই আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ডউত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের ক্লাব কর্মচারী ছিলেন বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়া সূত্রে খবর। পাঁচটি মৃতদেহ ইতিমধ্যেই শেষকৃত্যের জন্য পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে

ক্লাবের মালিক, সৌরভ লুথরা এবং গৌরব লুথরা এবং অন্যদের বিরুদ্ধে খুনের পরিমাণ নয় এমন অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গোয়া পুলিশ চারজন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সাওয়ান্ত নিহতদের নিকটাত্মীয়দের জন্য অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post