কলকাতাআচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী! বিল ফিরিয়ে দিলেন রাষ্ট্রপতি


রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনে বড় ধরনের পরিবর্তনের চেষ্টায় আপাতত ছেদ পড়ল। রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর জন্য যে বিল বিধানসভায় পাশ করেছিল রাজ্য সরকার, সেই সংক্রান্ত দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী বিলে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফলে, আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর জন্য রাজ্যের পরিকল্পনা কার্যকর হচ্ছে না।

রাজভবন সূত্রের খবর, গত বছরের ২০ এপ্রিল ‘পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২’ এবং ‘আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল, ২০২২’— এই দু’টি বিলই রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছিলেন। এই বিলগুলিতে রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর প্রস্তাব ছিল। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ‘আমির-ই-জামিয়া’ (চ্যান্সেলর) পদেও মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু সোমবার রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি এই দু’টি বিলেই সই করেননি। সূত্রের খবর, এর মূল কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, বর্তমানে রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মূল আইনে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘রাজ্যপাল তাঁর পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন।’ এই আইনি ভিত্তির প্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রপতি নতুন বিলে সম্মতি দেননি। যদিও এ নিয়ে এ দিন শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মাথায় কে থাকবেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিধানসভায় এই সংশোধনী বিল দু’টি পাশ হয়েছিল। তবে রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের ফলে আপাতত শিক্ষাঙ্গনে আচার্যের পদে রাজ্যপালই বহাল থাকছেন। রাজ্য সরকারের জন্য এটি একটি বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অবশ্য ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে আচার্যকে যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতেই কাজ করতে হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Post a Comment

Previous Post Next Post