এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার দিন শেষ। ম্যাপিংয়ের কাজও প্রায় শেষ। ১৪ ডিসেম্বর প্রথম লিস্ট প্রকাশ করবেন সংশ্লিষ্ট বুথের বিএলও-রা। প্রত্যেক বিএলও তাদের নিজের নিজের বুথে কাদের নাম বাদ গেল, কেন বাদ গেল সেই তালিকা ঝুলিয়ে দেবেন। এরপর ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
এখন ১১ ডিসেম্বর, শেষদিনে বিকেল ৪টে পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী মোট 'আনকালেক্টেবল' ফর্মের সংখ্যা ৫৮ লাখের কিছু বেশি। মোট অসংগৃহীত ফর্ম ৫৮,০৮,২৩২। এরমধ্যে মৃত ২৪,১৮,৬৯৯। নিরুদ্দেশ ১২,০১,৪৬২। স্থানান্তরিত ১৯,৯৩,০৮৭। ডুপ্লিকেট ১,৩৭,৪৭৫। অন্যান্য ৫৭,৫০৯। কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "এইসব ভোটারদের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। যদি কেউ নির্দিষ্ট কারণে ফর্ম পূরণ করে থাকতে না পারেন, তাহলে তিনি ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ইআরও-এর কাছে নাম তোলার জন্য উপযুক্ত নথির ভিত্তিতে আপিল করতে পারবেন।"
এর পাশাপাশি, ম্যাপিং করা যায়নি এমন 'আনম্যাপড' ভোটারের সংখ্যা ৩০ লাখ। যারা ফর্ম ফিলআপ করে জমা দিলেও, ২০০২-এর ভোটার তালিকার সঙ্গে তাদের কোনওভাবি লিংক বা ম্যাপিং করা যায়নি। এদের প্রত্যেককেই শুনানি ও যাচাইয়ের জন্য ডাকা হবে। কমিশন সূত্রে খবর, মোট ২.৯৩ কোটি ভোটার ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম উল্লেখ করে গণনা ফর্ম পূরণ করেছেন। আর ৩.৮৪ লক্ষ ভোটার, যারা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিলেন না, কিন্তু তারা নিজেদের ২০০২ সালের ভোটার হিসেবে তাদের বাবা-মায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ করেছেন ঠাকুরদার নামও। তবে এই ৩০ লাখ ছাড়াও, যাদের ২০০২-এর সঙ্গে ম্যাপিং সন্দেহজনক বলে প্রমাণিত হবে, তাদেরও শুনানিতে ডাকা হবে বলে খবর কমিশন সূত্রে।
এখন এইসবের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের SIR ফর্ম ফিলআপ করা-না করা প্রসঙ্গে বিতর্ক ছড়িয়েছে। যে প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর এখন যদি তাঁকে তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বলা হয়, তবে তা অসঙ্গত। এই প্রক্রিয়া তাঁকে সম্মানিত করার পরিবর্তে তিনি অপমানিত বোধ করবেন। যে প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কাদের SIR ফর্ম পূরণ করতে হবে না।
ফ্ল্যাগড বা মার্কড ভোটার
নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, ফ্ল্যাগড বা মার্কড ভোটারদের SIR ফর্ম বা এনুমারেশন ফর্ম ফিলআপ করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। কী এই ফ্ল্যাগড বা মার্কড ভোটার? এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য সাংবিধানিক পদাধিকারীরা হলেন এই ফ্ল্যাগড বা মার্কড ভোটার। সাধারণ নাগরিকদের মতো, এই শ্রেণির ব্যক্তিরা SIR ফর্ম পূরণ করতে আইনত বাধ্য নন। মুখ্যমন্ত্রীর নামও এই মার্কড(marked) তালিকাতেই রয়েছে। তাই কমিশন জানিয়েছে যে, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ফর্ম পূরণ করার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ তাঁর নাম এই বিশেষ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে EF-এর ক্ষেত্রে এই পর্বে ফর্ম ফিলাপ না করলেও চলে। পরে দ্বিতীয় পর্বে ডকুমেন্ট জমা দিলেই হয়। সাংবিধানিক পদাধিকারী ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বিশিষ্টজনেরা যেমন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, জুডিশিয়ারি, আর্টস, কালচার, পাবলিক সার্ভিস সহ বিখ্যাত বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এই আওতায় পড়েন।