বসিরহাট আদালতে যাওয়ার সময় মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনার শিকার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষ। বসন্তী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে ভোলানাথ ঘোষের গাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে একটি দ্রুত গতির ট্রাক। দুর্ঘটনায় ভোলা ঘোষের ছেলে এবং গাড়ির চালকের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় ভোলা ঘোষকে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। মিনাখাঁ থানার এক কর্তা জানিয়েছেন, “এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে তা নিশ্চিত নয়। তদন্ত চলছে। পলাতক ট্রাক চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ।”
সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলার অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষের গাড়িতে ধাক্কা। দ্রুত গতির একটি ট্রাক সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটিতে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে গাড়ির চালক ও ভোলানাথ ঘোষের ছেলের। মামলার অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষকে গুরুতর আহত মিনাখাঁ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পরে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বয়ারমারি পেট্রোল পাম্পের সামনে এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে ট্রাক চালক পলাতক। তার খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। এদিকে গোটা ঘটকায় খুনের অভিযোগে সরব হয়েছে ভোলানাথ ঘোষের পরিবার।
বসিরহাটের পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান জানিয়েছেন, গুরুতর জখম ভোলা ঘোষকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। মৃতদেহ দুটি পোস্টমর্টেমের জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা ঘোষের বড় ছেলে বিশ্বজিৎ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তাঁর দাবি, জেলে বসেই শাহজাহান শেখের নির্দেশেই এই হামলা চালানো হয়েছে। ভোলা ঘোষ ওই দিন যে মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন, সেটি শাহজাহান শেখের দায়ের করা একাধিক মামলারই একটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ট্রাকটি বিপরীত দিক থেকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এসে প্রাইভেট গাড়িটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
এদিকে আজকের এই ঘটনায় মমতা সরকারকেই নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, "এমন এক রাজ্য যেখানে অপরাধীদের রক্ষা করাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তাদের আড়াল করতে ব্যস্ত! এর চেয়ে ভয়ঙ্কর আর কী হতে পারে? সন্দেশখালির ন্যাজাট থানা এলাকায় আজ শেখ শাহজাহান মামলার এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে নৃশংসভাবে টার্গেট করে মারাত্মকভাবে জখম করা হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এই ঘটনায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শাহজাহান মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শুনানি ছিল। মূল সাক্ষীদের অন্যতম, ভোলা ঘোষ তাঁর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের গাড়িতে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে। ভোলার ছেলে এবং গাড়ির চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত ভোলা ঘোষকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। খবর অনুযায়ী, ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন শাহাজাহানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্দুল হালিম মোল্লা এবং তার সঙ্গী নজরুল মোল্লা। আব্দুল হালিম মোল্লার নাম দীর্ঘদিন ধরেই সিবিআইয়ের মোস্ট-ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছে। ফলে স্পষ্ট যে এটি কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত ঠান্ডা মাথার খুন"।