রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রাণী চিকিৎসা শিবির থেকে উপকৃত মুর্শিদাবাদ নিবাসী।


খবর বাংলা সংবাদ ওয়েব ডেস্ক :

রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রাণী চিকিৎসা শিবির থেকে উপকৃত মুর্শিদাবাদ নিবাসী পশুপালক

রাজেশ নন্দী (২৫), মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা -১ ব্লক এর অধীন মহুলা -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হালালপুর গ্রামের উদীয়মান কৃষক। ১৩-টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিভক্ত বেলডাঙা-১ ব্লকের অধিবাসীদের মূল জীবিকা কৃষি ও পশুপালন। কৃষির মধ্যে প্রধান হল দু ফসলি ধান, তিল এবং  সবজি, পাশাপাশি বাণিজ্যিক ফসলের মধ্যে প্রধান হল পাট এবং সর্ষে চাষ। অন্যদিকে পশু পালনের মধ্যে ছাগল, গাভী এবং মুরগি মূল প্রাণী। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রথাগত পদ্ধতিতে চাষ করার ফলে কৃষকরা প্রায়শঃই ক্ষতির সম্মুখীন হন - এই অবস্থায় অনেকেই অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ এবং নির্মাণ কর্মীর  কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। 

রাজেশের পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ রাজেশ কিছুদিন একটি বেসরকারী সংস্থায় কাজ করার পর শারীরিক সমস্যার কারণে  চাকরি ছেড়ে পারিবারিক কৃষি কাজে যুক্ত হন। পরিবারের মোট কৃষি জমি এক একর। কৃষির পাশাপাশি রাজেশ এর জীবিকার মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে  ছাগল পালন।  কিন্তু এই অঞ্চলের প্রাণী পালকদের প্রধান সমস্যা সঠিক সময় প্রাণীর টিকাকরণ। ফলে প্রচুর প্রাণী পিপিআর, গোট পক্স রোগে আক্রান্ত হয় মারা যায়। রাজেশও এই সমস্যা থেকে মুক্ত নন। মূলতঃ গ্রামের ঘরোয়া চিকিৎসকের কাছ থেকেই প্রাণীর টিকাককরণ করতেন রাজেশ - খরচ পড়তো প্রাণী পিছু ১৫-২০ টাকা। বার্ষিক খরচ প্রায় ৫০০/- টাকা। 

এই অবস্থায় গ্রামেরই এক কৃষকভাইয়ের কাছ থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে রাজেশ রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের জীবিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরিষেবার কথা জানতে পারেন। এরপর ফাউন্ডেশনের কর্মীর সাথে যোগাযোগ করে ৫-ই ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে হালালপুর গ্রামে প্রাণী স্বাস্থ্য এবং টিকাকরণ শিবিরে অংশগ্রহণ করেন।  এই শিবিরে হালালপুর গ্রামের মোট ৫৮-জন প্রাণী পালক অংশগ্রহন করে এবং গাভী, ছাগল ও মুরগী সহ ১৯২-টি প্রাণীর টিকাকারণ সম্পন্ন হয়।  প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই শিবিরের আগে পিপিআর টিকার অভাবে রাজেশের ১৫-টি ছাগল মারা যায় - যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০০০০/- টাকার বেশি। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন আয়োজিত এই প্রাণী স্বাস্থ্য শিবিরে সহায়তা করে সারগাছি ধান্যগঙ্গা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। শিবির থেকে রাজেশ কৃমির ওষুধ সহ ১৫-টি ছাগলের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পিপিআর টিকাকরণ করেন। পরিষেবার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩০০/- টাকা। পাশাপাশি চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রাণীর বয়স অনুসারে টিকার সঠিক সময়, প্রাণীর দানা খাবার, জৈব সুরক্ষার বিষয়গুলিও বিস্তারিত ভাবে জানেন। ফলস্বরূপ এর পর একটি প্রাণীও গোট পক্স এবং পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয় নি - মৃত্যু হার শূন্য। রাজেশের প্রাণী খামারে বর্তমান ছাগলের সংখ্যা ৩০-টি। এর মধ্যে বয়স্ক ছাগল রয়েছে ১৮-টি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজেশ আরো ২০-টি বাচ্চা আশা করছেন - সম্ভাব্য মুনাফা ৪০০০০/- টাকা। 

রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রাণী স্বাস্থ্য শিবির থেকে উপকৃত রাজেশের কথায় " প্রাণীর জীবন চক্র অনুসারে টিকাকরণের বিষয়টি আমাদের অনেকেরই অজানা ছিল, পাশাপাশি গ্রামে পশু চিকিৎসকের অভাবে প্রতি বছর প্রাণীর মৃত্যু আমাদেরএকদিকে আমাদের কঠিন প্রতিবন্ধকতা। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের এই শিবির একদিকে আমাদের তথ্য সমৃদ্ধ করেছে - অন্যদিকে প্রাণীর মৃত্যুর হার কমিয়ে রোজগার বাড়িয়েছে '।   এলাকার প্রাণী পালনের সমস্যার গভীরতা বিবেচনা করে বর্তমান বছরেও ধারাবাহিকভাবে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এই প্রাণী স্বাস্থ্য ও টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করেছে। এভাবেই গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামে জীবিকা বিকাশের পরিষেবা প্রদান করে প্রাণিপালকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্রত রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন।


*** বি. দ্র : বিজ্ঞাপনের স্বার্থে প্রচারিত । এই প্রতিবেদনের কোনরকম সত্যতা যাচাই করেনি খবর বাংলা সংবাদ, এই প্রতিবেদনের জন্য খবর বাংলা সংবাদ কোনভাবেই দায়ী নয়। 

Post a Comment

Previous Post Next Post