ভারী বৃষ্টির জের! ফুঁসছে যমুনা, দিল্লির বুকেও বন্যার আশঙ্কা


নয়াদিল্লি: প্রবল বর্ষায় বিধ্বস্ত গোটা উত্তর ভারত। বৃষ্টির (rain) তোড়ে একাধিক রাজ্যে বিপর্যস্ত জনজীবন। গত তিন দিনে সব রাজ্য মিলিয়ে প্রায় চল্লিশজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। 

বৃষ্টির জন্য যমুনায় (Yamuna river) ক্রমশ জলস্তর বাড়ছে। তার জেরে চিন্তা বাড়ছে রাজধানী নিয়েও। গতকাল সন্ধেবেলাতেই যমুনার জলস্তর ২০৫.৩৩ মিটার হয়ে বিপদসীমা পেরিয়েছে। সকালে তা আরও বেড়ে ২০৬.২৪ মিটার ছুঁয়েছে। হরিয়ানায় হাতনিকুণ্ড বাঁধ থেকে আরও জল ছাড়ার কারণে বেড়েছে জলস্তর। 

এই কারণেই দিল্লির (Delhi) বুকেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যমুনার পাড়ের নীচু এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। একাধিক ত্রাণ শিবিরে এবং কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। বন্য়াপ্রবণ এলাকার উপর নজরদারি করার জন্য দিল্লি সরকারের তরফে ১৬টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যমুনার জলের স্তর কতটা বেড়েছে তার উপরেও নজর রাখছে দিল্লি সরকার। দিল্লি ও লাগোয়া এলাকায় জল জমার রুখতে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, গত ৪০ বছরে এই প্রথম দিল্লিতে এত বৃষ্টি হয়েছে। কেজরিওয়াল বলেন, '১৯৮২ সালে শেষবার ২৪ ঘণ্টায় ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবার যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তা খুবই বেশি। দিল্লির নিকাশির এত বেশি বৃষ্টি সহ্য করার ক্ষমতা নেই।'    

আরও বেশি বৃষ্টির খবর:
প্রবল বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh)। একই পরিস্থিতি জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থানে। এই সবকটি রাজ্যে আরও বেশি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কথা বলেছে আবহাওয়া দফতর। 
গোটা উত্তর ভারত বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে সেনা এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (NDRF)। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণকার্য এবং উদ্ধারকাজ চালাতে কাজ চলছে। একাধিক নদীর জলস্তর অনেক বেড়েছে। যার ফলে বিপদের মুখে একাধিক লোকালয়। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের একাধিক রাস্তা বৃষ্টির তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। 

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হিমাচল প্রদেশের। একাধিক জায়গায় ভূমিধস, হড়পা বানের ঘটনা ঘটছে। টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়ি। ইতিমধ্যেই বিপুল অঙ্কের সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। 

উত্তরাখণ্ডও বৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত। একাধিক রাস্তা ও হাইওয়ে ধসের কারণে বন্ধ হয়েছে। একাধিক নদী ও ঝোরার জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। রাজস্থান, পঞ্জাব এবং হরিয়ানার একাধিক এলাকাতেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ওই রাজ্যগুলির একাধিক এলাকা জলমগ্ন। 

আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্জা (Western Disturbance) এবং বর্ষার কারণেই এমন ভারী বৃষ্টি হয়েছে।





Post a Comment

Previous Post Next Post