রাজ্যভাইরাল ভিডিওয় কি দিলীপ ঘোষ? জল্পনা তুঙ্গে, কেন বারবার আক্রমণের মুখে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি


সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও: দিলীপ ঘোষ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে একটি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও—একান্তই ব্যক্তিগত মুহূর্ত, ঘরের ভিতরে ধারণ করা সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য জুড়ে। ভিডিও ভাইরাল হতেই নেট দুনিয়ায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা, নানা প্রশ্ন।

কেউ বলছেন, এই ভিডিওর মাধ্যমে এক ব্যক্তিগত পরিসরকে অকারণে উন্মুক্ত করা হয়েছে। কেউ আবার দাবি করছেন, ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি নাকি স্বয়ং দিলীপ ঘোষ—বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও একসময় বাংলার রাজনীতিতে বিজেপির মুখ।

তবে এই ভিডিওর সত্যতা এখনও যাচাই করেনি খবর বাংলা সংবাদ ডট ইন, এবং স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না—ভিডিওটি আসল না কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা তৈরি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, যদি এটি আসল হয় তবে তা বাইরে এল কীভাবে? কে বা কারা ছড়াল এমন গোপন ভিডিও?

ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই সাংবাদিকরা একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি তাঁর সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকেও। ফলে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি এই মুহূর্তে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যদি এই ভিডিও আসল হয়, তাহলে কারা দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে ফাঁস করল? আবার, যদি এটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভুয়ো ভিডিও হয়, তাহলে তা কারা বানাল এবং কেন? রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কি দিলীপ ঘোষকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে?

দিলীপ ঘোষ, এক সময়ের সাংসদ এবং বঙ্গ বিজেপির কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত। সেই সময় যখন রাজ্যে বিজেপির অস্তিত্ব ছিল ক্ষীণ, তখন সংগঠনকে জমি থেকে তুলে এনেছিলেন তিনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রভাব হ্রাস পায়। সুকান্ত মজুমদারের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই অনেকের মতে দিলীপ ঘোষকে একপ্রকার কোণঠাসা করে রাখা হয়।

তারপর আসে তাঁর বিয়ে—যেখানে আরও এক দফা সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। দলে অনেকে তাঁর এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেননি বলেও চর্চা হয়। এরপর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জগন্নাথধামে গিয়ে তৃণমূল মন্ত্রীর সংবর্ধনা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ আরও প্রশ্নের জন্ম দেয়। তখন থেকেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেন, তাঁকে 'টার্গেট' করা শুরু হয়েছে।

এই ভিডিও কাণ্ড সেই ষড়যন্ত্রেরই আরেকটি অধ্যায় কি? নাকি আদৌ সত্যিই ঘটেছে যা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে?

বর্তমানে এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক জীবন দুইই চরম সংকটের মুখে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে—রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু তার মানে কি ব্যক্তিগত আক্রমণ? সত্যি কি রাজনীতির আঙিনা এতটাই রূঢ় হয়ে উঠেছে যেখানে ব্যক্তিগত গণ্ডিও অটুট থাকছে না?

শেষ কথা, এই ভিডিও যদি ভুয়ো হয় তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আর যদি সত্যিও হয়, তবুও প্রশ্ন থেকেই যায়—কার অধিকার আছে এমন গোপন মুহূর্তকে সর্বসমক্ষে আনার?

এই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি, কিন্তু বিতর্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দিলীপ ঘোষ এখন চর্চার কেন্দ্রে—তবে তাঁর মুখ থেকেই সত্যিটা না শোনা পর্যন্ত, সমস্তকিছুই রয়ে যাচ্ছে জল্পনার পর্দায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post