কনভয় থেকে নেমে রাবিশ ভরা লরি আটকালেন মেয়র!




কনভয় থেকে নেমে তারাতলায় মাঝেরহাট ব্রিজের উপরে রাবিশ ভর্তি লরি ধরে, পুলিশের হাতে তুলে দিলেন মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয় মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। তিনি ১৬ নম্বর বরোর বৈঠকে যোগ দিতে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

পুলিশি গাফিলতি নিয়ে এ দিন প্রকাশ্যেই বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায় ‘কণ্ঠ আমার রুব্ধ আজিকে…’। কনভয় থেকে নেমে মাঝেরহাট ব্রিজের উপরে রাবিশের লরিটি থামিয়ে ফিরহাদ চালককে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই সব কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?’ চালক উত্তর দেন, ‘ময়নাগড়ে।’ এই কথোপকথন চলাকালীন খবর পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্র্যাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চলে আসেন মাঝেরহাট ব্রিজের উপরে।

তাঁকে দেখে মেয়র বলেন, ‘আপানারা থাকতে এই সব কী করে হয়? একটু দেখুন।’ এরপরে ওই সার্জেন্ট লরিটিকে আটকে মাঝেরহাট ব্রিজের উপর থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। অবিলম্বে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকেও বিষয়টি জানিয়ে আগামী দিনে এই এলাকার ট্র্যাফিক ব্যবস্থায় আরও কড়াকড়ির কথা বলেন তিনি।

এদিকে লরির পিছনে লেগে যায় গাড়ির লাইন। লরি ব্রিজ থেকে নামার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এর পরে কনভয়ে ওঠার সময়ে ফিরহাদ বলেন, ‘খালি চোখে আমি বুঝতে পারলাম রাবিশ ভর্তি। আর পুলিশ বুঝতে পারল না কিছু!’ পুলিশের ভূমিকায় কার্যত বিস্মিত তিনি। এর পরে তিনি জানান, ‘আমি নিজের চোখে একটি লরি দেখলাম। আরও চার-পাঁচটা লরির নম্বর টুকেছি।’

তিনি বলেন, ‘এই সব লরির নম্বর পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠানো হবে।’ মেয়র নিজেই জানান, তাঁর চোখে আসা রাবিশ বহনকারী লরিগুলি ১৫ বছরের পুরোনো। লড়ঝড়ে গাড়িগুলোর নম্বর প্লেটও স্পষ্ট নয়। ১৫ বছরের পুরোনো গাড়ি শহরের রাস্তায় কী ভাবে চলে, তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলেন মেয়র। তাঁর অনুমান, ওই রাবিশ লরিতে করে জলাশয় ভর্তি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

তিনি জানান, দিনের বেলায় শহরের রাস্তায় রাবিশ ভর্তি লরি চলাচলের খবর তাঁর কানে আগেই ছিল। এ দিন মেয়র বলেন, ‘পুলিশ ব্যবস্থা নিলে সহজেই রাবিশ ভর্তি লরি আটাকানো যায়।’ মেয়রকে এই দিন বলতে শোনা যায়, ‘এই ভাবে একা একা শহরের দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না। সকলের সহযোগিতা দরকার।’ তিনি জানান, নির্মাণ বর্জ্য ধ্বংস করার জন্য কলকাতায় পৃথক প্রকল্প রয়েছে।

বাড়ি ভাঙার রাবিশ সেই প্রকল্পে নিয়ে না গিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। এই সমস্যার কথা তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন কি না, জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সময়মতো জানাব। তবে তার আগে গ্রাউন্ড ওয়ার্কটা বন্ধ হওয়া দরকার।’




Post a Comment

Previous Post Next Post