খবর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক : লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে অবশেষে ময়না তদন্তে বসছে বিজেপি। আগামী বুধবার দলের কার্যকারিণী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে আসন ধরে পর্যালোচনা করা হবে পরাজয়ের কারণ। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রার্থী, দল নিয়োজিত পর্যবেক্ষক এবং জেলা নেতৃত্বের পৃথক রিপোর্ট নিয়ে কথা হবে বৈঠকে।
এছাড়া, পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা হতে পারে। ওই বৈঠকে দিলীপ ঘোষ যোগ দেবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে খড়্গপুরে বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে বেশ কিছু কর্মী সমর্থক নতুন সভাপতি নির্বাচন নিয়ে সরব হন। তারা দাবি তোলেন দিলীপ ঘোষকেই ফের সভাপতি করতে হবে। তাঁর নামে জয়ধ্বনি দেন সমর্থকেরা। সাময়িক ছন্দপতন ঘটে অনুষ্ঠানের।
দিলীপ এ নিয়ে মুখ না খুললেও বিদায়ী সভাপতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার পরে বিরক্তির সঙ্গে বলেন, কর্মীদের আবেগ থাকতেই পারে। তবে সভাপতি নির্বাচনের একটি পদ্ধতি আছে। সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই তা করা হবে। সোমবার সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘খড়্গপুরে তো আমার নামেই জয়ধ্বনি হবে। আর কার নামে হবে!’
প্রসঙ্গত, খড়্গপুর হল মেদিনীপুর লোকসভা আসনের অন্তর্গত। এবার লোকসভা ভোটে দিলীপকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে প্রার্থী করা হয়েছিয়। মেদিনীপুরে টিকিট দেওয়া হয় অগ্নিমিত্রা পলকে। দুই আসনেই বিজেপি হেরে গিয়েছে। ফলে সাংসদ পরিচয়ও হাতছাড়া হয়েছে তাঁর।
লোকসভার ভোটে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার আগেই দল আরও বড় ধাক্কা খেয়েছে সদ্য অনুষ্ঠিত চার কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে। তারমধ্যে তিনটি আসন শুধু বিজেপির দখলে ছিল তাই-ই নয়, দেড় মাস আগে লোকসভা ভোটে ওই তিন কেন্দ্রে পদ্ম শিবির ভাল মার্জিনে এগিয়ে ছিল। সেই সব আসনেও জোড়াফুল শিবির বিপুল ভোটের ব্যধধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, বনগাঁ লোকসভা এলাকার অন্তর্গত বাগদা আসনে মতুয়া পরিবারের মেয়ে মধুপর্ণা ঠাকুরের জয়। রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ এবং কলকাতায় মানিকতলা আসনেও জিতেছে তৃণমূল।
দিলীপ জানান, 'পার্টির নির্দেশে আমি উপনির্বাচনে প্রচার করেছি। তবে কেন চারটি আসনেই হারতে হল সেটা বলতে পারব না। দলের ভোট কুশলীরা ভাল বলতে পারবেন। আমি ওই দায়িত্বে ছিলাম না।'
তবে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির কথায়, লোকসভা ভোটের ধাক্কা কর্মীরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে হয়। উপনির্বাচনে অন্য রাজ্যেও বিজেপির ফল ভাল হয়নি। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা নয় বলেই ফল এমন হয়েছে, মনে হয়।
অন্যদিকে, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার বাগদায় বিজেপির পরাজয়ের জন্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর কথায়, বাগদায় তিনদিন প্রচার করেছি। এমন ফল হওয়ার কথা ছিল না। তবে কেন হল তা ভোটদানের হার দেখলেই বোঝা যায়। সেখানে ৪৫ হাজার মানুষ ভোট দেননি। এই ভোটারদের আসলে বুথেই আসতে দেয়নি তৃণমূল। অবাধ ভোট হলে ফল অন্যরকম হবে।