”বাংলার শিল্পীদের ৫ লক্ষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা”, উত্তম কুমারের প্রয়াণদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের



বৃহস্পতিবার উত্তম কুমারের প্রয়াণদিবস উপলক্ষে মহানায়ক শ্রেষ্ঠ সম্মান পেলেন চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, গায়ক রূপঙ্কর বাগচী, অভিনেতা গার্গী রায়চৌধুরী-সহ একাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী। তাঁদের পুরস্কার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এরপরেই প্রসেনজিতের এক বিশেষ উদ্যোগের প্রশংসা করলেন।

তিনি বলেন, ”প্রসেনজিৎ একটা ভাল আইডিয়া করেছে। একটা মডেল করেছে। আমাকে অফিসাররা দেখে এসে বলেছে। ও প্রায় ১০০টি জায়গায় ৪০ ৫০ জন বসার মত একটা ঘর তৈরী করছে। আমরা সেটাতে খুশি হয়েছি। এটা যদি হয়, তাহলে বুথ লেভেলে বা গ্রাসরুট লেভেলে সিনেমা আরো অনেকটাই ছড়িয়ে পড়বে। গ্রামীণ অনেক জায়গায় এমনকি কিছু প্রত্যন্ত গ্রামে মানুষ সিনেমা দেখতে পাবে। তাতে ওরা যে সিনেমাগুলো তৈরী করে তার একটা মার্কেটও পাবে, এমপ্লয়মেন্টও বাড়বে। আমি এখনো মনে করি উত্তম কুমার দেশের গর্ব জাতির গর্ব, সংস্কৃতির গর্ব, চলচ্চিত্রের গর্ব। আমার জীবনে খুব আফসোস, যদিও সুচিত্রা সেন মৃত্যুর কয়েদিন আগে আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন। আমি গিয়েছিলাম, শেষ কয়েকদিন রোজ যেতাম। সুপ্রিয়া দি, মাধবী দি, তনুজা দিকে চিনি। সৌমিত্রদাকে দেখেছি কিন্তু উত্তমকুমারের সঙ্গে দেখা হয়নি কখনো। এই না দেখাটা বার বার আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় ভবানীপুরে অনেক সিনেমা হল ছিল। আমার মায়ের সাথে হাত ধরে সিনেমা দেখতে যেতাম। মা যেত আমাকে নিয়ে যেত। সেই সময়ে যে গান গুলো শুনতাম আজও মনে আছে। আমরা আজকাল বাংলা গান খুব কম ব্যবহার করি। সিনেমা থেকে শুরু করে সিরিয়েল সবেতেই কম ব্যবহার করি বাংলা গান। কিন্তু স্বর্ণ যুগের গানের বাজার কোনদিন ফুরোবে না। বাংলা গানের মাধুর্য সংস্কৃতি ভাষা সুর, কথা অনবদ্য।”

এরপরেই শিল্পীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ”আমি আজও বলি ৪৫ বছরেও আমরা উত্তম কুমারকে ভুলতে পারিনি। নামেও যেমন উত্তম কাজেও তেমন উত্তম। ভাল ভাল ফিল্মস্টার লিপ দিতে পারেন না। কিন্ত উত্তম কুমার সব গান মুখস্ত করতেন। আমি ২০১২ সাল থেকে স্বীকৃতি চালু করেছিলাম। বড়রা যেমন গান গাইবে তেমন যারা ইয়ং শিল্পীরা আছেন তাদেরও আমরা আনছি। বাংলা সংস্কৃতিকে আমাদের আরো কুসুমিত, পল্লবিত, বিকশিত সুললিত সুশোভিত করে তুলতে হবে। সভ্যতা ও সংস্কৃতি হল জাতির মেরুদন্ড। বাংলা মোদের জন্মভূমি, মাতৃভূমি। এই ভূমি আমাদের উর্বর করে তুলতে হবে। স্বরূপ অরূপ ওরা তো আছেই। ওরা অনেক কিছু করেছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য। সবসময় সিনেমা ও টেলিভিশনে কর্মরত কলাকূশলীদের পাশে তারা আছেন। ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা তাদের জন্য ৫ লক্ষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা করেছি। কলাকুশলী ও শিল্পী মিলিয়ে রয়েছেন প্রায় ৪৮০০ জন। তারা সকলেই স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আছেন। এদের পরিবারের সদস্যদের ধরলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্য বীমা থেকে উপকৃত হচ্ছেন। এছাড়াও ফিল্ম ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে আমাদের সরকার দুঃস্থ শিল্পী ও কলাকুশলীদের মেয়ের বিয়ের জন্য এবং মৃত্যুকালীন কিছু সাহায্য করেন। গৌতম দা একবার আমাকে জানিয়েছিল বিজিবিএসে আমরা যেন ফিল্ম সেক্টরকে ইনভল্ভ করি সেটা করেছি। এছাড়া কালচারাল এক্টিভিটিস যেমন গান থেকে শুরু করে সবকিছুই আমরা উন্নত করেছি। আমাদের সংগীত একাডেমিও তৈরী হয়ে গিয়েছে। সময় করে উদ্বোধন করব। এর ফলে সঙ্গীত জগৎ অনেকটাই উপকৃত হবে। এছাড়া অরূপকে বলেছি টেলি একাডেমির প্রোগ্রামটাও করতে। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল প্রতিবার হয়। সব সিনেমা দেখুন তবে বাংলা সিনেমাকে অবহেলা করবেন না।”

Post a Comment

Previous Post Next Post