খবর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক : তরুণ-তরুণীকে সবার সামনে ফেলে মারের পর মার। ছটফট করছেন তরুণী। আছাড়ি-পিছাড়ি খাচ্ছেন। আবার মার। আর সেই কাণ্ড দেখতে ভিড় জমে গিয়েছে চারিপাশে। যেন পথনাটিকা চলছে আর অবাক চোখে দেখছে গ্রাম্য় দর্শক। না নাটক নয়। ঘোর বাস্তব। এই বাংলারই ছবি। এতক্ষণে চোপড়ার ভিডিও দেখে ফেলেছে গোটা বাংলাই।
তরুণীকে মারা হচ্ছে, তরুণী যন্ত্রণায় কাতরামাচ্ছেন, তারপর আবার তাঁকে মারা হচ্ছে। আর গোল হয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছে সবাই।
দুটো মানুষ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আর উপস্থিত এই লোকজনগুলো তারিয়ে তারিয়ে তা উপভোগ করছে। বাঁচার জন্য়, আহত তরুণী এক মহিলার পায়ে পড়ে গেলেন কিন্তু তাঁকে ফের মারমুখী তৃণমূল কর্মীর সামনে ফেলে দিলেন এই ব্য়ক্তি। প্রথমে তরুণীকে মার, তারপর তরুণকে মার। আবার তরুণীকে মার। এইভাবেই চলতে থাকল অত্য়াচার। দেখতে থাকল সাধারণ মানুষ - এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছে বাংলা। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। এই মারমুখী তৃণমূল কর্মী জেসিবি এখন পুলিশের জালে।
এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরে চোপড়া ব্লকের লক্ষ্মীপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের বাসিন্দা ওই যুগলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকায় সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে ওই যুগলকে বেধড়ক মারধর করেন মোড়লরা। পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কেন আইন হাতে তুলে নিলেন তাঁরা?
এরই মধ্যে চোপড়ায় সালিশি সভায় তরুণ-তরুণীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের দাবি, চোপড়ার নিগৃহীতা অসামাজিক কাজ করছিলেন। সেই জন্যই গ্রামে সালিশি সভা বসে। এই ঘটনায় কিছু ভুল থাকলেও গ্রামে এরকম সালিশি সভা হয়। নিগৃহীতা ও তাঁর স্বামী এই নিয়ে কোনও অভিযোগও করতে চাননি। কোনও জবরদস্তিও হয়নি বলে দাবি করেছেন চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। অন্যদিকে এই ঘটনায় তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে। ঘটনার নিন্দা করে পুলিশের ভূমিকায় প্রশংসা করেছেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ।
অন্যদিকে সালিশি সভায় যুগলকে মারধরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা। তিনি পোস্ট করেছেন, ' পশ্চিমবঙ্গের একটি ভয়ঙ্কর ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে ধর্মতন্ত্রের নামে বর্বরতার ছবি ধরা পড়েছে। তৃণমূল কর্মী, বিধায়করা এটাকে আইনের মান্যতা দিচ্ছেন। সন্দেশখালিই হোক বা উত্তর দিনাজপুর এবং আরও অনেক জায়গা, দিদির বাংলা মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়। '