খবর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক : আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের তদন্তে প্রথম থেকেই যে একাধিক অভিযোগ উঠছে, তার মধ্যে একটি অন্যতম হল, তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ। নির্যাতিতার পরিবার এই দাবি করে এসেছে গোড়ার দিন থেকেই। শুধু অভিযোগ নয়, এমনটাও দেখা যায়, ঘটনার পরেই সেমিনার রুম সংলগ্ন এলাকা ভেঙে ফেলা হয় সংস্কার করার জন্য। এবার জানা গেল, সেমিনার রুম সংলগ্ন জায়গা ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ নিজেই।
প্রসঙ্গত, এই ভাঙচুরের পরেই তদন্তের দায়িত্বভার হাতে পায় সিবিআই। কিন্তু তার আগেই ক্রাইম সিন অর্থাৎ সেমিনার রুম নষ্ট করে ফেলার অভিযোগ আরওই জোরদার হয়ে ওঠে। প্রশ্ন ওঠে, হঠাৎ কেন এই ভাঙচুর? কার নির্দেশেই বা এই সংস্কার?
এই নিয়ে খোঁজ করতে গিয়ে সামনে এসেছে, পিডব্লিউডি-কে লেখা একটি অনুমতিপত্র। যা আসলে, চিকিৎসকদের অন ডিউটি রুম-শৌচাগার ভাঙার নির্দেশ ছাড়া কিছু নয়। সেই নির্দেশপত্রে সই রয়েছে সন্দীপ ঘোষেরই। তারিখ দেওয়া রয়েছে, ১০ অগস্ট। অর্থাৎ ৯ তারিখে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ঠিক পরের দিন।
আরজি করে এই ভাঙচুর নিয়ে যখন আদালতে প্রশ্ন উঠেছিল, তখন কর্তপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, এই সংস্কারের সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। সেই মোতাবেকই কাজ হয়। তবে পিডব্লিউডি-র কাগজে স্পষ্ট হয়ে গেল, এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেই সন্দীপ ঘোষ পূর্ত বিভাগের সিভিল ও ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সংস্কারের।
ওই নির্দেশনামায় উল্লেখ করা রয়েছে, ১০ অগস্ট আরজি করের প্ল্যাটিনাম জুবলি বিল্ডিংয়ে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েকের উপস্থিতিতেই সংস্কার-জনিত ভাঙচুরের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতোই নির্দেশ দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। অর্থাৎ নির্দেশনামার বয়ানে স্বাস্থ্যভবনও জড়িয়ে রয়েচে।
এই ঘটনা সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরা তথা বিরোধীরা। ঘটনার পর থেকেই যে অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা, তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলেছে, তা এখন স্পষ্ট বলেই দাবি তাঁদের, যার পিছনে রয়েছে সন্দীপ ঘোষের পুরো সিন্ডিকেট।