রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য কোথাও সংবর্ধনা নিতে চাইলে কোন অনুষ্ঠানে, কার কাছ থেকে সংবর্ধনা নিতে যাচ্ছেন, তা আগাম জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে— রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কোনও মন্ত্রী যদি কোনও অনুষ্ঠানে কাউকে সংবর্ধনা দিতে যান, সেটাও আগাম মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে জানাতে হবে।
সূত্রের দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁর এই নির্দেশ বলে মনে করছেন রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য।
কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্য, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে যদি বিতর্কিত কোনও ব্যক্তি থাকেন এবং তিনি যদি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেন, তা হলে তা নিয়ে বিরোধী শিবির জলঘোলা শুরু করার সুযোগ পেয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে বিরোধীরা সরকার বিরোধী প্রচার শুরু করে দিতে পারে।
এই ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করছেন বলে মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্যের বক্তব্য। রাজ্যের প্রবীণ এক মন্ত্রীর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী এই সংবর্ধনা নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের তাঁর দপ্তরে আগাম জানাতে বলেছেন। একটি বিষয় স্পষ্ট, তাঁর কাছে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য রয়েছে। তাই তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন।’
রাজ্য মন্ত্রিসভার এক সদস্যের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুই হেভিওয়েট ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে ইঙ্গিত করেই এই সংবর্ধনা দেওয়া–নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। এই দু’জন সাম্প্রতিক কালে এমন কয়েকটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যেখানে বিতর্কিত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন বলে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে খবর এসেছে।
একটি মঞ্চে এমন ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন যার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে বলেও তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে খবর এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না বলে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের পর্যবেক্ষণ।
অতীতে তৃণমূলের মন্ত্রী অথবা নেতাদের একাংশের সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের ছবি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সিপিএম অথবা বিজেপি এই ছবিগুলিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারের কাজে ব্যবহার করেছে। যদিও বিরোধী নেতাদেরও কয়েকজনকে এই ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপি নেতাদের এক কয়লা মাফিয়ার সঙ্গে দেখা গিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তৃণমূলের কারও বিরুদ্ধে যাতে এমন কোনও অভিযোগ তোলার সুযোগ না–থাকে তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী সতর্কবার্তা দিয়েছেন বলে জোড়াফুলের একাংশের।