আমজনতার দুয়ারে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে ৭৫ দিন ধরে হেলথ ক্যাম্প করার কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তত ১২০০ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে ‘সেবাশ্রয়’ শিরোনামে এই কর্মসূচি হবে বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত প্রতিটি বিধানসভাতেই ক্যাম্প হবে। অভিষেকের সেই ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২ জানুয়ারি থেকে ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্রের ৪১টি জায়গায় হেলথ ক্যাম্প করে এই কর্মসূচির সূচনা হতে চলেছে।
শনিবার প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ডায়মন্ড হারবার এসডিও গ্রাউন্ডে অভিষেকের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কর্মসূচির সূচনা হওয়ার কথা। একাধিক স্কুল, ক্লাব, হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে এই হেলথ ক্যাম্প হতে চলেছে। মশাট মহাশক্তি এফপি স্কুল মাঠ, সংগ্রামপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠ, নারায়ণপুর এফপি স্কুল মাঠ, সিংহবেড়িয়া প্রাইমারি স্কুল মাঠ, নুরপুর হাইমাদ্রাসা মাঠ— প্রভৃতি জায়গায় এই ক্যাম্প হবে। একই সঙ্গে খাজেরপোল হাসপাতাল মাঠ, দেওয়ানতলা হাসপাতাল মাঠেও এই ক্যাম্প হবে। আগামী দিনে ধাপে ধাপে এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অন্য বিধানসভাগুলির কোন কোন জায়গায় ‘সেবাশ্রয়’ ক্যাম্প হবে, তা ঘোষণা করা হবে।
সাধারণ মানুষের দুয়ারে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে এই ক্যাম্পগুলিতে একাধিক চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচিতে চিকিৎকদের যে টিম কাজ করবে, তার অন্যতম সদস্য অভীক ঘোষ জানিয়েছেন, ‘অনির্বাণ দৌলুই, শেখ মিরাজউদ্দিন–সহ আমাদের পাঁচজন চিকিৎসকের একটি টিম এই কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন। ডায়মন্ড হারবার বিধানসভায় প্রতিটি ক্যাম্পে সকাল–বিকেল মিলিয়ে মোট চার জন চিকিৎসক থাকবেন। এছাড়া আইএমএ–র প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন।’
তৃণমূল সূত্রের খবর, চিকিৎসা পরিষেবা পেতে কেউ এই ক্যাম্পে গেলে স্বেচ্ছাসেবকরা তাঁর নাম রেজিস্ট্রেশন করে হাতে একটি ইউনিক টোকেন তুলে দেবেন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর বিভিন্ন তথ্য সংবলিত একটি বুকলেট দেওয়া হবে। এরপর চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে ওই ব্যক্তিকে।
চিকিৎসক যদি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোনও টেস্ট প্রেসক্রাইব করেন, তখন স্বেচ্ছাসেবকরা ওই ব্যক্তিকে ডায়গনস্টিক টেস্টের জায়গায় নিয়ে যাবেন। এই ক্যাম্পগুলিতে ব্লাড প্রেশার, সুগার, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি পরীক্ষা–সহ মোট ছ’রকম টেস্টের ব্যবস্থা থাকবে। টেস্টের পর চিকিৎসক যে ওষুধ প্রেসক্রাইব করবেন, তা ওই ক্যাম্প থেকে নিখরচায় দেওয়া হবে। এই জন্য প্রতিটি ক্যাম্পে একটি ফার্মেসি থাকবে।
যদি কোনও রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করার প্রয়োজন হয়, তা হলে চিকিৎসকরা ওই ক্যাম্প থেকে সেই রেফারের কাজ করবেন। বৃহত্তর কলকাতায় মোট ১২টি মেডিক্যাল কলেজ এবং বড় হাসপাতালে এই রেফার করা হবে। এই রোগী যাতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে সহজে ভর্তি হতে পারেন তা দেখার জন্য একটি টিম কাজ করবে। মূলত স্পেশালাইজ়ড ট্রিটমেন্টের জন্যই এই রেফারেলের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম পর্বে টানা ১০ দিন এই ক্যাম্প হবে। প্রথম পর্বের ক্যাম্প শেষ হয়ে যাওয়ার পর পাঁচ দিনের ফলো–আপ ক্যাম্প হবে।