নাগপুরে ধুন্ধুমার। সোমবার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চলে লুঠপাট, ভাঙচুর৷ একাধিক এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যেই গ্রেফতার ৩০ জনের বেশি। নাগপুরের সংঘর্ষের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ভিকি কৌশলের ছবি 'ছাওয়া'র নাম। 'ছাওয়া' দেখার পরেই নাকি ঔরঙ্গজেবের সমাধি ভাঙতে লাঠি হাতে বেরিয়ে পড়ে একদল লোক, এমনটাই অভিযোগ ওঠে নেটপাড়া।
জানা যায় যে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরিয়ে দেওয়ার দাবি ঘিরে রণক্ষেত্র নাগপুর। বলা হয়, মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি শম্ভাজিনগর থেকে ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরাতে হবে। সূত্রের দাবি, এদিন অশান্তির সূত্রপাত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, ওই বিক্ষোভে পবিত্র ধর্মীয় মন্ত্র লেখা একটি কাপড় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এই সংঘর্ষ সামলাতে ২৫ জন পুলিসও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৬৩ ধারা। জারি করা হয়েছে কার্ফু। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে সংঘর্ষকারীদের ঠেকাতে তৎপর হয় প্রশাসন। আপাতত কোনও স্থানে জমায়েত নিষিদ্ধ। শান্তি বজায় রাখতে আবেদন জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস।
কিন্তু যে সমাধি ৩০০ বছর ধরে ওই স্থানে রয়েছে, হঠাত্ কেন সেই সমাধি সরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠল। এখানেই উঠে আসে ভিকি কৌশলের ছবি 'ছাওয়া' প্রসঙ্গ। শিবাজি মহারাজের ছেলে সম্ভাজি মহারাজের জীবন নিয়ে এই ছবির গল্প। এই ছবির একটা বড় অংশ জুড়ে দেখানো হয়েছে ঔরঙ্গজেবের আমলে কীভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলত। ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করা অনেকেরই অবশ্য দাবি, এই ছবিতে যে ইতিহাস দেখানো হয়েছে, তা সঠিক নয়। অনেকটাই বাড়িয়ে চড়িয়ে ইতিহাসকে অতিরঞ্জিত করার চেষ্টা চলেছে।
নেটপাড়া জুড়ে তাই নাগপুর সংঘর্ষের কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়েছে ভিকি কৌশলের ছবিকেই। এক নেটিজেন লেখেন, 'একটা সিনেমা দেখে যদি কেউ গোটা শহর জ্বালিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তাদের মানসিক চিকিত্সা দরকার। আর যে রাজনৈতিক দল সেটা সাপোর্ট করে, তাদেরও চিকিত্সা দরকার'। কেউ কেউ আবার বলিউডকে বয়কটের ডাকও দেন। এক ব্যক্তি লেখেন, 'বলিউডকে বয়কট করা উচিত। সিনেমায় ইতিহাস বিকৃত করার দায়ে এই মেরুদন্ডহীন ইন্ডাস্ট্রিকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না'।