দোকানের বোর্ডে বাংলায় নাম না থাকলে আটকে যাবে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল


কলকাতা পুর এলাকায় কোনও দোকানের সাইন বোর্ডে বাংলায় নাম লেখা না থাকলে আটকে যাবে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল। শুক্রবার পুরসভার অধিবেশনে এ কথা জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘সাইন বোর্ডে কেউ অন্য ভাষা রাখলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে অন্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষাও ব্যবহার করতে হবে। না হলে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল আটকে দেওয়া হবে।’ এই বিষয়ে তিনি লাইসেন্স বিভাগকে সক্রিয় হওয়ারও নির্দেশ দেন।

শুক্রবারের পুর অধিবেশনে ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে বলেন, ‘কলকাতা শহরে ৮৬ শতাংশ মানুষ বাংলায় কথা বলেন। অথচ অভিজাত শপিং মলের মধ্যে যত দোকান রয়েছে, তার ৯৯ শতাংশের ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলায় কিছু লেখা নেই।’ তিনি প্রস্তাব দেন, কলকাতার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা করুক পুরসভা। এর আগে মেয়রের নির্দেশ ছিল, যে সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলা ভাষা লিখবে না, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডিসপ্লে বোর্ড খুলে দেবে পুরসভা। এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে মেয়র বলেন, ‘ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলার ব্যবহার না হলে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল আটকে যাবে।’

এই নির্দেশ কার্যকর করা নিয়ে অবশ্য পুর আধিকারিকদের গলায় শোনা যায় অসহায়তার সুর। তাঁরা জানান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলা ভাষা ব্যবহার না করলে, ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল আটকে দেওয়ার মতো কোনও সুযোগ কলকাতা পুর আইনে বলা নেই। আধিকারিকদের বক্তব্য, ‘এই নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে আইন অমান্যের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারি আমরা। নিয়মকে কার্যকর করতে হলে পুরসভাকে আইনের পরিবর্তন করতে হবে। তাহলেই ডিসপ্লে বোর্ডে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে।’

যদিও আধিকারিকদের সংশয় কাটাতে পুরসভার আইন বিভাগের মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মেয়র যা বলেছেন তা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনি নির্দেশের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক নির্দেশের অনেক ফারাক রয়েছে। তাই পুরসভার কর্মীদের মেয়রের নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই।’

Post a Comment

Previous Post Next Post