আরও এক বার বিতর্কের কেন্দ্রে দানিল মেদভেদেভ। ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে অবাছাই বেঞ্জামিন বনজ়ির কাছে পাঁচ সেটের লড়াই (৩-৬, ৫-৭, ৭-৬, ৬-০, ৪-৬) হেরে গেলেন তিনি। এই নিয়ে পর পর তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিতে হল তাঁকে। মে মাসে ফরাসি ওপেন ও জুনে উইম্বলডনেও প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। বনজ়ির কাছে হেরে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি মেদভেদেভ। র্যাকেট আছড়ে ভেঙে ফেলেন। তার পর চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে কেঁদে ফেলেন ২০২১ সালের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন। নিজেদের ম্যাচে অবশ্য সহজ জয় পেয়েছেন নোভাক জোকোভিচ ও এরিনা সাবালেঙ্কা।
হারের পাশাপাশি ম্যাচে বিতর্কে জড়ান মেদভেদেভ। প্রথম দুটো সেট হেরে গিয়েছিলেন তিনি। তৃতীয় সেটে ৫-৪ এগিয়ে থাকাকালীন সার্ভিস ছিল বনজ়ির। সেই গেম জিতলে স্ট্রেট সেটে মেদভেদেভকে হারিয়ে দিতেন তিনি। বনজ়ির প্রথম সার্ভিস নেটে লাগে। দ্বিতীয় সার্ভিস করার আগে দেখা যায়, কোর্টে থাকা এক ক্যামেরাম্যান কোর্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তা দেখে চেয়ার আম্পায়ারের মনে হয়, খেলার ছন্দ নষ্ট হয়েছে। তাই তিনি বনজ়িকে আবার প্রথম সার্ভিস নিতে বলেন।
চেয়ার আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি মেদভেদেভ। তিনি তেড়ে যান চেয়ার আম্পায়ারের দিকে। প্রশ্ন করেন, কেন বনজ়িকে আবার প্রথম সার্ভিস নিতে বলা হল। মেদভেদেভ সমর্থন পান লুই আর্মস্ট্রং স্টেডিয়ামের দর্শকদের। টানা ৬ মিনিট ধরে তাঁরা চেয়ার আম্পায়ারকে বিদ্রুপ করতে থাকেন। তত ক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। মেদভেদেভকে দেখা যায়, হাতের ইশারায় সমর্থকদের তাতাচ্ছেন। এই বিদ্রুপের ফলে হয়তো কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন বনজ়ি। সেই পয়েন্ট খোয়ান তিনি। টাইব্রেকারে সেই সেটটাও হারেন। পরের সেট ৬-০ জেতেন মেদভেদেভ। দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি হয়তো শেষ পর্যন্ত জিতবেন। কিন্তু পঞ্চম সেটে ৪-৫ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় নিজের সার্ভিস ধরে রাখতে পারেননি রাশিয়ার টেনিস তারকা। তাঁকে হারিয়ে অঘটন ঘটান ফরাসি বনজ়ি।
মেদভেদেভ হারলেও জিতেছেন জোকোভিচ। অবাছাই খেলোয়াড়কে হারিয়েছেন তিনি। জোকোভিচ যখন প্রথম বার ইউএস ওপেনে খেলতে নামেন তখন জন্মাননি তাঁর কিশোর প্রতিপক্ষ লার্নার টিয়েন। ১৯ বছরের টিয়েনকে হারিয়ে ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেন জোকোভিচ। স্ট্রেট সেটে (৬-১, ৭-৬, ৬-২) জিতলেও জোকোভিচকে সমস্যায় ফেলল তাঁর পায়ের যন্ত্রণা। মেডিক্যাল বিরতি নিতে হল তাঁকে। যদিও তাতে খেলার ফলে প্রভাব পড়েনি। সহজ জয় মহিলাদের শীর্ষবাছাই এরিনা সাবালেঙ্কারও। স্ট্রেট সেটে (৭-৫, ৬-১) জিতে তিনিও দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছেন।
প্রথম রাউন্ডে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে টিয়েনের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন জোকোভিচ। গত মাসে উইম্বলডন সেমিফাইনালের পর থেকে কোর্টে দেখা যায়নি তাঁকে। কেন দেখা যায়নি, তা বোঝা গেল এই ম্যাচে। মেডিক্যাল বিরতি নিলেন। ডান পায়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল। ফলে যন্ত্রণা হচ্ছিল। তার চিকিৎসা করিয়ে আবার খেলতে নামলেন তিনি। একমাত্র দ্বিতীয় সেটেই জোকোভিচের বিরুদ্ধে কিছুটা লড়াই করেছিলেন টিয়েন। বাকি দুটো সেটে দাঁড়াতে পারেননি তিনি।
ফ্লাশিং মিডোজ়ে নিজের ৮০তম জয় পেলেন জোকোভিচ। তিনিই ওপেন এরার প্রথম টেনিস খেলোয়াড় যিনি টানা ৭৫ গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতলেন। তার মধ্যে ৫৫ ম্যাচ স্ট্রেট সেটে জিতেছেন সার্বিয়ার তারকা।
খেলা শেষে জোকোভিচ বলেন, “খুব অদ্ভুত ম্যাচ হল। প্রথম সেট ২০ মিনিটে শেষ হল। দ্বিতীয় সেট ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে। দ্বিতীয় সেটের টাইব্রেকারে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটা জেতার পর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।”