‘বিজ্ঞাপন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক বিষয়...’, পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে


পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলা বন্ধ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন শীর্ষ আদালতে পতঞ্জলির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। মামলার শুনানিতে বিচারপতি বি. ভি. নাগরত্না বলেন, ‘যখন কোনও পণ্যের উৎপাদনে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তখন সেই পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ এর পরেই ১১ অগস্ট, সোমবার শীর্ষ আদালত মামলাটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিরুদ্ধে IMA-এর অভিযোগ
সূত্রের খবর, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছিল, পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের কিছু বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল যে তাদের পণ্যগুলি বিভিন্ন রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় করতে সক্ষম। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বা অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাকে আয়ুর্বেদের তলায় দেখানো হচ্ছে, এমনটাই দাবি ছিল IMA-এর। এর পরেই মামালা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এ ছাড়াও, আদালত পতঞ্জলি আয়ুর্বেদকে নির্দেশ দিয়েছে, বিজ্ঞাপনের বিষয়ে আরও সচেতন থাকার জন্য।

আয়ুষ মন্ত্রকের ১৭০ নম্বর নীতি বিতর্ক
কেন্দ্র সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে যুক্তি দেন যে, ‘নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্তিকর কিছু দেখানো হলে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সেই কারণেই কেন্দ্র সরকার ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক্স রুলস ১৯৪৫ থেকে রুল ১৭০ বাদ দিয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, ঐতিহ্যবাহী ওষুধের বিজ্ঞাপনের জন্য আগাম অনুমোদনের প্রয়োজন হতো।

তবে আইনজীবী প্রণব সচদেবা রুল ১৭০ বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে খুব সহজে প্রতারিত হন। আয়ুর্বেদিক বিজ্ঞাপনে যদি বলা হয় যে এটি কোনও রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় করতে পারবে, তাহলে অনেকেই প্রলুব্ধ হবে।’ এ প্রসঙ্গে মেহতা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে সন্দেহ করাও উচিত নয়।’
আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্ট মামলার শুনানিতে বলেছে, এই মামলার মূল উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে এবং তাই এটির আর বিবেচনার প্রয়োজন নেই। এই রায়ের ফলে, পতঞ্জলি এবং অন্যান্য আয়ুর্বেদিক সংস্থাগুলি কোনো বিভ্রান্তিকর বা ভুল তথ্য বিজ্ঞাপনে দিতে পারবে না। আদালতের নির্দেশে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিজ্ঞাপন মামলার নিষ্পত্তি হলেও রুল ১৭০-এর অপসারণ নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post