আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেই সন্ত্রাস ইস্যুতে পাকিস্তানকে সরাসরি আক্রমণ শানাল ভারত। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় ও মদত দিয়ে আসছে। নিজেদের ব্যর্থতার দায় প্রতিবেশী দেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া তাদের পুরনো অভ্যাস।”
তিনি আরও জানান, “আমরা পরিস্থিতির উপর ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছি। তিনটি বিষয় একেবারে পরিষ্কার — প্রথমত, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে আশ্রয় দেয় ও তাদের কার্যকলাপকে সমর্থন করে। দ্বিতীয়ত, নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার দায় প্রতিবেশীদের ঘাড়ে চাপানো পাকিস্তানের অভ্যাস। তৃতীয়ত, আফগানিস্তান যখন নিজস্ব সার্বভৌমত্বের প্রয়োগ করছে, তখন তাতে পাকিস্তান ক্ষিপ্ত হয়েছে।”
রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন,“ভারত আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার প্রতি সম্পূর্ণভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।” ভারতের এই প্রতিক্রিয়া সামনে আসে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের বিতর্কিত মন্তব্যের পর। আসিফ অভিযোগ করেছিলেন, কাবুলের তালিবান সরকার নাকি ভারতের হয়ে “প্রক্সি ওয়ার” চালাচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, আফগান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের পিছনে “গোপন পরিকল্পনা” ছিল। উল্লেখ্য, এটি ছিল আফগান বিদেশমন্ত্রী মুত্তাকির প্রথম ভারত সফর, যেখানে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়টি সামনে আসে।
এই কূটনৈতিক বিরোধ এমন সময়ে ঘটছে, যখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে টানা সংঘর্ষের পর বুধবার গভীর রাতে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই সংঘাতে দুই দেশেরই বেশ কয়েকজন সেনা ও সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক দফতর জানিয়েছে, “দুই দেশই গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবে।”
তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক্স (X)-এ পোস্ট করে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান,“আফগান বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আক্রমণ না হলে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে।”