গণধর্ষণ নয়! দুর্গাপুর কাণ্ডে জানাল পুলিশ, প্রশ্নের মুখে ধৃত সহপাঠীর ভূমিকাও


দুর্গাপুর: দুর্গাপুরের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণ নয়। ধর্ষক একজনই। নির্যাতিতার জবানবন্দি এবং ঘটনার পুনর্নিমাণের পর প্রাথমিকভাবে জানাল পুলিশ। মঙ্গলবার ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নির্যাতিতার সহপাঠীও। তাঁর ভূমিকা নিয়েও উঠছে একধিক প্রশ্ন।
মঙ্গলবার ধৃত এক যুবক ও নির্যাতিতার সহপাঠী ছাত্রকে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। হাসপাতালে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। এরপরই সন্ধ্যার দিকে সহপাঠীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণধর্ষণের অভিযোগের তদন্তে নেমে নির্যাতিতার সহপাঠীকে আটক করে পুলিশ। যুবককে তাঁকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। তদন্তকারী সূত্রে জানা যায়, মালদার এই বাসিন্দা যুবক তদন্তে সহযোগিতা করলেও মাঝেমধ্যেই পুলিশকে ‘মিসগাইড’ করছিল। যুবকই অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে। ওই যুবকই প্রথমে নির্যাতিতার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। কিন্তু সেই ঘটনা আবার নির্যাতিতা নিজে বারবার আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নির্যাতিতা-সহপাঠীর সঙ্গে সম্পর্কের কোনও কথা আড়াল করার চেষ্টা করছেন?
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ আইকিউ সিটি হাসপাতালের পিছনে পরানগঞ্জের শ্মশান কালীমন্দির যাওয়ার রাস্তায় জঙ্গলের ভিতর অকুস্থলে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা, এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায়, সিআই (এ) রণবীর বাগ। এদিন আসনসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিকভাবে তদন্তের সব গুরুত্বপূর্ণ দিকই সম্পন্ন হয়েছে। তবে বেশ কিছু রিপোর্ট এখনও আসেনি। নির্যাতিতা এবং তাঁর সহপাঠীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সহপাঠীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী একজনই ধর্ষণ করেছে। বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অকুস্থলে বাকি যারা ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী গণধর্ষণের মামলা দেওয়া হয়েছে। ছিনতাই হওয়া মোবাইলও উদ্ধার হয়েছে। এদিন সকালে ধৃত শেখ নাসিরউদ্দিন ও শেখ রিয়াজুদ্দিনকে নিয়ে বিজড়ায় তাদের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখান থেকে তাদের ঘটনার রাতে পরনের পোশাক সংগ্রহ করা হয়। এর আগে আরও তিন ধৃতের পোশাকও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সহপাঠীর পোশাকও বাজেয়াপ্ত করা হয়। সব পোশাকই ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে। ধৃত ছয় ও নির্যাতিতার মেডিকো লিগ‌্যাল পরীক্ষাও হবে। ধৃতদের ডিএনএ পরীক্ষার জন‌্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, একজনই ধর্ষণ করেছে। তবে বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতার সহপাঠীর ভূমিকাও প্রশ্নাতীত নয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post