'অনুরোধ করব রাতে না বেরোতে', দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক


"রাত ১২:৩০ টায় ক্যাম্পাসের বাইরে কেন, কী করে বেরিয়েছিলেন"? দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার নিন্দা জানালেও মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

দুর্গাপুরে মেডিকেল পড়ুয়াকে গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ খুলে বিতর্কে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের সরকার এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলে। তিনজন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।”

ঘটনার নিন্দা জানালেও মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। তিনি বলেন, “বিশেষ করে মেয়েদের বেশি রাতে বেরনো উচিত নয়। তাদের নিজেদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ওই ছাত্রী বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ত। এই ধরনের ঘটনার প্রতিষ্ঠানেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে—ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পুলিশ তো বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বসে থাকবে না। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টা বেরিয়ে কোথাও যায়, আমি ঘটনাকে সমর্থন করছি না, এটা নিন্দনীয়"।

পাশাপাশি তিনি বলেন, "হোস্টেলের নিয়ম মেনে চলা উচিত এবং বেশি রাতে বাইরে বেরনো উচিত নয়। বেসরকারি কলেজগুলিকে তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং আশেপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে,”। একই সঙ্গে ওড়িশার বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবেশী রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "ওড়িশায় সমুদ্র সৈকতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। ওড়িশা সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে?"

যদিও নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে রাত ১০টার আগেই। নির্যাতিতার বাবা-মা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সহপাঠীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁদের মেয়ের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে দুর্গাপুরে পৌঁছে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেন ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা বছর ২০ -এর মেডিক্যাল ছাত্রী শুক্রবার রাতে এক সহপাঠীর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। তখনই কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের পিছু নেয়। সহপাঠী পালিয়ে গেলে মেয়েটিকে একা পেয়ে তারা জঙ্গলের ভিতর টেনে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। ছাত্রীটির মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

Post a Comment

Previous Post Next Post