তিন ছেলের পরিবারে ‘চতুর্থ ছেলে’! খসড়া তালিকায় নাম দেখে হতবাক বৃদ্ধা


প্রতিবেশী দম্পতিকে 'বাবা-মা' দেখিয়ে ভোটার তালিকায় আত্মগোপন করে রয়েছিল ভুয়ো ছেলে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। নির্বাচন কমিশন বঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতেই ফাঁস হল ওই ভুয়ো ছেলের পরিচয়। পাসপোর্টধারী ওই ভুয়ো ছেলে এখন কর্মসূত্রে কাতারবাসী। না, এটা নিছক কোনও গল্প কথা নয়। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বিধানসভার মহেশডাঙ্গা ক্যাম্পের ১৮৯ নম্বর বুথে।এই ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নড়েচড়ে 
বসেছেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। 

মেমারির বিধানসভার মহেশডাঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ি প্রবীণা লালমতি বিশ্বাসের।তাঁর স্বামী প্রমথ বিশ্বাস ১৭-১৮ বছর আগে প্রায়ত হয়েছেন। লালমতি দেবীর দাবি,তাঁর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। মেয়েরা বিবাহিত।কিন্তু গত মঙ্গলবার এসআইআর (SIR)এর খসড়া ভোটার তালিকায় প্রকাশ হলে তিনি জানতে পারেন তিন ছেলের পাশাপাশি আরও একজনকে তাঁর ছেলে হিসেবে ওই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে রয়েছে। খসড়া তালিকায় ১৮৯ নম্বর বুথের ১২০ নম্বর সিরিয়ালে ‘পবিত্র বিশ্বাস’ নামে এক ব্যক্তিকে তাঁদের চতুর্থ ছেলে হিসেবে দেখানো হয়েছে। যিনি আবাার বর্তমান কর্মসূত্রে কাতারে রয়েছেন।

এলাকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে,২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (তৎকালীন ১৮৬ নম্বর বুথ, বর্তমানে ১৮৯) ১২২ নম্বর সিরিয়ালে লালমতি বিশ্বাসের নাম নথিভুক্ত ছিল। ওই তালিকায় তাঁর স্বামী প্রমথ বিশ্বাসের নাম ১২১ নম্বর সিরিয়ালে ছিল।কয়েকদিন আগে পবিত্র বিশ্বাসের স্ত্রী সুকৃতা বিশ্বাস এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিএলও কে জমা দেন। সুকৃতা সেই ফর্মেই পবিত্র বিশ্বাসের বাবা হিসেবে প্রয়াত প্রমথ বিশ্বাস এবং মা হিসেবে লালমতি বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করেন। এমনকী ওই ফর্মে প্রমথ ও লালমতির ভোটার আইডি নম্বরও লেখা হয়েছিল। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই ফাঁস হয়ে গিয়েছে সব জাল জোচ্চুরি। সামনে চলে এসেছে প্রমথ বিশ্বাস ও লালমতি বিশ্বাস কে “বাবা-মা’ সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলানো ভুয়ো ছেলের পরিচয়। 

এই নিয়ে লালমতি বিশ্বাস পরিস্কার জানিয়ে দেন! “পবিত্র বিশ্বাস নামে কাউকে চেনেন না। সে তাঁর ছেলেও নয়। কীভাবে খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁকে ও তাঁর মৃত স্বামীকে ওই পবিত্র তার ’বাবা-মা’ বানালো, কী উদ্দেশ্যেই বা এসব করলো তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। এর তদন্ত হওয়া দরকার।" বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বুথের বিএলও স্মিতা সরকার (মিস্ত্রী) বলেন, "লালমতি বিশ্বাস আমাকেও বলেছেন ,পবিত্র বিশ্বাস নামে তাঁর কোনও ছেলে নেই। এই কথা জানার পরই বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।"

Post a Comment

Previous Post Next Post