ঠিক কী ঘটেছিল?
গত ১৩ ডিসেম্বর অম্বেশের বোন বন্দনা জৌনপুরের জাফারাবাদ পুলিশ স্টেশনে বাবা, মা এবং দাদার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। বন্দনার দাবি ছিল, ৮ ডিসেম্বর তাঁর দাদা ফোন করে জানান, মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। আর সেই জন্য তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অম্বেশ বোনকে জানান, তিনি বাবা-মাকে খোঁজার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। এর পরে থেকে অম্বেশের ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বাবা-মায়েরও কোনও খোঁজ মেলেনি।
পুলিশের তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এই নিখোঁজ অভিযোগের পরে পুলিশ তদন্ত করছিল। গত ১৪ ডিসেম্বর হঠাৎ জৌনপুরে ফিরে আসেন অম্বেশ। সেই সময়ে বোন এবং আত্মীয়রা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখনই ভেঙে পড়েন তিনি। বাবা-মাকে খুনের কথা স্বীকার করেন, দাবি পরিজনদের।
বাবা-মাকে খুন করে দেহ ছয় টুকরো করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, অম্বেশ পাঁচ বছর আগে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। কিন্তু পেশায় প্রাক্তন রেলকর্মী শ্যাম বাহাদুর এবং তাঁর স্ত্রী এই বিয়ে মেনে নেননি। এই প্রবীণ যুগলের তিন মেয়ে এবং এক ছেলে। শেষ পর্যন্ত বাবা-মায়ের চাপের মুখে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে রাজি হন অম্বেশ। স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়ার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পেতে বাবার দ্বারস্থ হন এই যুবক। তাতে রাজি হননি শ্যাম বাহাদুর।
গত ৮ ডিসেম্বর এই নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় অম্বেশের। তিনি ঝগড়ার মুহূর্তে নোড়া দিয়ে মাকে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। এর পরেই চিৎকার করতে শুরু করেন শ্যাম বাহাদুর। সেই সময়ে তাঁকেও নোড়া দিয়ে আঘাত করে খুন করেন অম্বেশ, অভিযোগ এমনটাই।
এর পরে তাঁদের দেহ ছয় টুকরো করে কেটে, বস্তায় ভরে নদীতে ভাসিয়ে দেন অম্বেশ, এই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। নিজের কুকীর্তি লুকিয়ে রাখার জন্য বোনকে ফোন করে মিথ্যে তথ্য দেন তিনি এবং তার পরে ফোন সুইচড অফ করে দেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ১৪ ডিসেম্বর বাড়ি ফেরার পরে আত্মীয়দের চাপে পুরোটা স্বীকার করেন অম্বেশ। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শ্যাম বাহাদুরের দেহের একটি অংশ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। যে ধারালো হাতিয়ার দিয়ে ওই দু'টি দেহকে টুকরো করা হয়েছিল তাও খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। শ্যাম বাহাদুর এবং ববিতার দেহের অন্য অংশের খোঁজ চলছে, জানিছে পুলিশ।