'আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা', ভবঘুরে মহিলার দাবি ঘিরে হইচই


পরনে ধুলো কাদা মাখা নোংরা নাইটিটা কোনও এক সময় নীল রঙের ছিল। উস্কোখুস্কো, জটপড়া চুল। ডানলপ মোড়ে ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধা। কাঁধে একটা ঝুলি। কখনও চায়ের দোকান, কখনও লস্যির দোকান, কখনও বা ফাস্টফুডের দোকানের সামনে বসে পড়ছেন ঝুলি নিয়ে। বিরক্ত দোকানদাররা মুখ ঝামটা দিয়ে বিদায় করে দিচ্ছেন দোকানের সামনে থেকে। পথচলতি মানুষজনও তাঁকে দেখে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন।

দৃশ্যত মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধার দাবি, তাঁর নাম ইরা বসু। ঝরঝরে ইংরেজি ও বাংলায় তাঁর কথা শুনলে গভীর শিক্ষার ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। এক সময় খড়দহের নামী একটি স্কুলের শিক্ষিকা ইরার দাবি অনুযায়ী তাঁর আরও একটি পরিচয় আছে। তাঁর বোনের নাম মীরা ভট্টাচার্য। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শ্যালিকা। বয়স সত্তরের কোটা ছাড়িয়েছে বৃদ্ধার। নীলচে নাইটি পরে খালি পায়ে ডানলপ মোড়ে পাগলের মতো কখনও রাস্তার একপাশে তো পরমুহূর্তে রাস্তার উল্টোপাশে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কাঁধের ঝুলিতে শতচ্ছিন্ন কয়েকটা জামাকাপড়। প্রায় এক বছর ধরে ডানলপ মোড়ের দোকানদাররা ওই বৃদ্ধাকে এ ভাবেই দেখতে অভ্যস্ত। ডানলপ মোড়ে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীদের কাছেও তাঁর পরিচয় ছিল অজানা। ফুটপাথবাসী ইরার খোঁজ কেউ রাখেন না। তা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই খড়দহ প্রিয়নাথ গার্লস হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের প্রাক্তন শিক্ষিকার।

উচ্চশিক্ষিতা ইরা এক সময়ে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছেন। স্কুলের তৎকালীন ও বর্তমান সহকর্মী ও পড়ুয়ারাও ইরার সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়তার বিষয়টি জানেন। স্কুলে চাকরির সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আত্মীয়তা নিয়ে কখনও জাহির করেননি ইরা। সহকর্মীরা জিজ্ঞাসা করলে কখনও সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতেন। আবার কখনও বুদ্ধবাবুর সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা নিয়ে গর্ব করেও কথা বলতেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post