মাটির নীচে থাকা পানীয় জল সরবরাহের পাইপ থেকে অনবরত জল বেরিয়ে রাস্তা ভিজে যাচ্ছে। ঠিক কোন জায়গার জন্যে এই পরিস্থিতি, তা খুঁজে পেতেই অনেকটা সময় লেগে যায় পুরকর্মীদের। ভিজতেই থাকে রাস্তা। বৃষ্টির আগেই নিকাশি পথ থেকে পলি তোলা হয় ধারাবাহিক ভাবে। তার পরেও নিকাশি পথের পাইপ, গালিপিট, ম্যানহোল থেকে অনেক সময়ে উপচে ওঠে জল। ঠিক কী কারণে এমন পরিস্থিতি, তা খুঁজে পেতেও সময় লাগে।
পানীয় জল সরবরাহ এবং নিকাশি–ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করতে এ বার শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই এই গুরুত্বপূর্ণ দুই পরিষেবার যাবতীয় রুটের ডিজিটাল মানচিত্র তৈরি করছে কলকাতা পুরসভা। এই মানচিত্র এক দিকে যেমন সমস্যার কারণ খুঁজে পেতে সহায়ক হবে, তেমনই স্পটে দাঁড়িয়ে কর্মীরা ঠিকঠাক কাজ করছেন কিনা, তারও খোঁজ দেবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, টালিগঞ্জ–যাদবপুর এলাকার পানীয়জল সরবরাহ পথের ডিজিটাল মানচিত্রের নকশা তৈরি হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আবার শ্যামবাজার–বড়বাজার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ–অফিসপাড়া, টালিগঞ্জ–ঢাকুরিয়া এলাকার নিকাশি পথের ডিজিটাল মানচিত্রের নকশাও হয়ে গিয়েছে।
৫টি বরোর ডিজিটাল মানচিত্রের নকশা পুর–আধিকারিকরা মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও দেখিয়েছেন। এ বার এই মানচিত্রগুলির প্রযুক্তিগত ব্যবহার শুরু করবেন পুর–আধিকারিকরা।
আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, অনেক এলাকায় মাটির নীচে পরিশোধিত পানীয় জল সরবরাহের পাইপ এবং নিকাশির পাইপ এমন ভাবে উপরে–নীচে রয়েছে যে এই দুই পথের উপরে নজরদারিতে খুব সহায়ক হবে এই ডিজিটাল মানচিত্র। একই ভাবে কোথায় জলের পাইপের ছিদ্র সারানো হচ্ছে, কোথায় জলের পাইপে ঝালাই চলছে, কোথায় নিকাশি পথে পলি তোলা হচ্ছে বা পাইপের মুখে প্লাস্টিক জমে আটকে গিয়েছে—এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও পুর–আধিকারিকদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে।
পুরসভার নিকাশি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়ছে, শহরের অধিকাংশ উত্তরণ–এ (বস্তিতে) যে পয়ঃপ্রণালী রয়েছে, তার সঙ্গে নিকাশি পথের কোনও যোগ ছিল না। সংশ্লিষ্ট বিভাগ শহরের প্রতিটি উত্তরণে নিকাশি সংযোগের কাজ শুরু করেছে। এই নিকাশি সংযোগগুলিকেও ডিজিটাল মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই কাজ শেষ হলে কলকাতার প্রতিটি উত্তরণই পয়ঃপ্রণালী সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্ত হবে।