দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত সাকারিয়া রাজেশভাই খিমজিভাইয়ের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। কেন হামলা, পরিকল্পিত হামলা কি না ইত্যাদি নানা তথ্যের তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের পুরনো কোনও অপরাধের ঘটনা রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল, গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। অভিযুক্তকে জেরাও করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অভিযুক্ত রাজেশভাই কুকুরপ্রেমী। ধরা পড়ার পর এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে তেমনই দাবি করেছেন অভিযুক্ত। তিনি আরও দাবি করেছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর স্বপ্নে পথকুকুরেরা আসছিল। তারা নিরাপত্তা চাইছিল। আর পথকুকুরদের নিরাপত্তার জন্যই তিনি দিল্লি আসেন। যদিও অভিযুক্তের এই দাবি নিয়ে সন্দিহান তদন্তকারীরা।
তবে তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন যে, উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাজেশভাই মাঝেমধ্যেই যাতায়াত করতেন। এ বছরের মে মাসে বাঁদরদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে অযোধ্যায় অনশনেও বসেছিলেন। এ ছাড়া গুজরাতের রাজকোটেও পশুদের সুরক্ষায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন রাজেশভাই। হামলার আগে দিল্লিতে তিনি কোথায় কোথায় ঘুরেছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন তদন্তকারীরা।
সূত্রের খবর, নজর রয়েছে অভিযুক্তের ফোন থেকে পাওয়া তথ্যের উপরেও। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ধৃতের চার বন্ধুর ভূমিকাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১৭ অগস্ট রাজকোট থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন অভিযুক্ত। রাজকোট থেকে অহমদাবাদে পৌঁছোন তিনি। সেখান মধ্যপ্রদেশের উজ্জৈন হয়ে দিল্লিতে যান রাজেশভাই। গত ১৯ অগস্ট নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে পৌঁছেছিলেন তিনি। সেখান থেকে তিনি শালিমার বাগে মুখ্যমন্ত্রীর পুরনো বাড়িতে যান। সেখানে রেকি করেন। একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ‘জনশুনানি’ চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শুনছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় আচমকাই এক যুবক কিছু কাগজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে যান। তাঁকে গালিগালাজ করেন। তার পর হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর মাথায়, হাতে এবং কাঁধে চোট লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি বাসভবনে সাত বিজেপি সাংসদের সঙ্গে দেখাও করেন মুখ্যমন্ত্রী।