সমকামিতা সম্পর্ক নিয়ে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল। তার জেরে খুন সালকিয়ার ফ্ল্যাটের মালিক।


সমকামিতা সম্পর্ক নিয়ে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল। তার জেরে খুন সালকিয়ার ফ্ল্যাটের মালিক। উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। ধৃতকে আজ হাওড়া আদালতে তোলা হবে। 

গত বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ সালকিয়া অরবিন্দ রোডের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে খুন হন অসীম দে (৬৪) নামে এক বৃদ্ধ। তারপরের দিন পরিবারের লোকেরা গোলাবাড়ি থানায় খবর দিলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ পাশের ফ্ল্যাট থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায় বৃহস্পতিবার রাত সোয়া আটটা নাগাদ এক আগন্তুক ব্যাগ হাতে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকছে। রাত দশটা কুড়ি নাগাদ সে ফ্লাট থেকে বেরিয়ে যায়। যাবার সময় সে অসীমের দুটি সোনার আংটি এবং মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। অসীমের বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের মামলা শুরু করে। 

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মাস চারেক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে অসীম বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয় ধৃত প্রসেনজিৎ চৌধুরী (৩১)র। পেশায় কাপড় বিক্রেতা প্রসেনজিৎ মঙ্গলাহাট, গোবরডাঙ্গা হাট সহ বিভিন্ন হাটে কাপড় বিক্রি করত। মাস চারেক আগে দুজনের মধ্যে আলাপের পর মাসখানেক আগে তারা দুজনেই সালকিয়ার বাঁধাঘাটে সাক্ষাৎ করে।এরপর দুজনের মধ্যে ভিডিও কলে কথাবার্তা চলতে থাকে। এই ভিডিও কল চলাকালীন অসীম দে বেশ কিছু ছবি তুলে রাখেন। পুলিশ তদন্তে উঠে আসে ওই গোপন ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে এই ভয় দেখিয়ে তাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডাকে অসীম। গত বৃহস্পতিবার একইভাবে প্রসেনজিৎকে সালকিয়ার ফ্ল্যাটে ডেকেছিল সে। প্রসেনজিৎ ফ্লাটে ঢোকার আগে মদ, কচুরি এবং তরকারি কিনে ঢোকে। এরপর  দুজনে মদ্যপান করে। খাবার খায়। দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের পর গোপন ছবি নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যায়। তারপর রাগের মাথায় প্রসেনজিৎ অসীমের মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয়। মাথার মধ্যে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের জন্য ঘটনাস্থলেই মারা যান অসীম। ফ্ল্যাট ছাড়ার আগে প্রসেনজিৎ অসীমের হাতের দুটি সোনার আংটি এবং মোবাইল ফোনটি নিয়ে চম্পট দেয়। পরে পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র এবং সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে আততায়ী প্রসেনজিতের খোঁজ পায়। গতকাল তাকে গোবরডাঙ্গার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরু করেছে পুলিশ। আজ ধৃতকে হাওড়া আদালতে তুলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন করা হবে। রবিবার ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক টিম খাবারের টুকরো, আধপোড়া সিগারেট এবং মদের বোতল উদ্ধার করে। ধরা পড়ার পর প্রসেনজিৎ তার সমস্ত অপরাধ কবুল করেছে। পুলিশ জানায় তার একাধিক পুরুষ সঙ্গী ছিল। এমনকি অসীমের চুরি করা সোনার আংটি তার এক বন্ধুকে উপহার দেয়। জেরায় কবুল করে সে।

Post a Comment

Previous Post Next Post