চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে সত্যিই কি গভীর প্রেম ছিল? মৃত্যুর আগে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি জয়ের


নয়ের দশকে মেয়ে মহলে হইচই ফেলে দিয়েছিল টলিউডের অত্যন্ত সুপরুষ অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অনুরাগীরা তো তাঁকে রোমান্টিক কিং নামেও ডাকতেন। ‘মিলনতিথি’ বা ‘হীরক জয়ন্তী’র সেই বিন্দাস প্রেমিক, বাস্তবেও পেতে চাইতেন সেই সময়ের কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা। এত জনপ্রিয়তার মাঝে সিনেপর্দার সঙ্গে সঙ্গে তাই রঙিন হয়ে উঠেছিল জয়ের বাস্তব জীবনও। একের পর এক বিয়ের প্রস্তাব। রক্তেলেখা ফ্য়ানের চিঠি। ফুলের তোড়া, নানা উপহার পেয়ে তখন জয় হয়ে উঠেছিলেন টলিউডের হার্টথ্রব। সেই জয়ের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন রটেছিল অঞ্জন চৌধুরীর বড় মেয়ে চুমকি চৌধুরীর। যে অঞ্জনের হাত ধরে সুপারহিট হীরক জয়ন্তী পেয়েছিলেন জয়, তাঁরই মেয়ের সঙ্গে প্রেম! সেই সময় তো অনেকেই মনেই করেছিলেন, সিনেপর্দার পাশাপাশি বাস্তবেও চুমকির গলাতেই মালা পরাবেন জয়। কিন্তু হল উল্টোটাই। চুমকির মন ভেঙে, তাঁর বিয়ের প্রস্তাবকে নাকচ করলেন জয়! তাহলে কি জয়ের প্রতি চুমকির প্রেম এক তরফা ছিল? নাকি পুরোটাই গুঞ্জন? কয়েক মাস আগে সিটি সিনেমাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনের আগল আলগা করেছিলেন জয় নিজেই। স্পষ্টই জানিয়ে ছিলেন তাঁর ও চুমকির সম্পর্কের কথা।

সালটা ১৯৯০। পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর ‘হীরক-জয়ন্তী’র শুটিং করছিলেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নায়িকা চুমকি চৌধুরী। প্রথম দিন শুটিংয়েই অঞ্জন চৌধুরী নাকি জয়কে সতর্ক করেছিলেন, মেয়ে চুমকিকে যেন প্রেমের ফাঁদে না ফেলেন তিনি। আসলে, ততদিনে জয় টলিউডের হার্টথ্রব, মেয়েমহলের আলোচনার কেন্দ্রে। তাই মেয়ের কথা চিন্তা করে অঞ্জন চৌধুরী নাকি কোনও সুযোগ নিতে চাননি। জয়ও পরিচালকের কথা মেনে, বাধ্য ছেলের মতো কথা শুনেছিলেন। শুটিং শেষ হলেই, চুমকির থেকে দূরে দূরে থাকতেন জয়। এমনকী, শুটিং ইউনিটের একজনকে বলেছিলেন, তাঁর নামে যেন আজেবাজে বলতে থাকে চুমকির কানে।

এই সাক্ষাৎকারে জয় দাবি করেছেন,হাজার চেষ্টার পরেও, চুমকির সঙ্গে বন্ধুত্বটা প্রেমের রূপ নেয়। চুমকির সঙ্গে ঘোরাফেরাও করেন। তবে ড্রাইভারের কাছ থেকে এই প্রেমের খবর পেয়েই, জয়কে ডেকে পাঠান অঞ্জন চৌধুরী। বাড়িতে ডেকে এনে চুমকিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। জয়ের দাবি, চুমকি নাকি স্পষ্ট তাঁর বাবাকে জানিয়ে ছিলেন, জয় ছাড়া কাউকে তিনি বিয়ে করবেন না। তবে জয় এই বিয়ের থেকে পিছিয়ে আসেন, তাঁর একটাই কারণ, কেরিয়ার। তিনি তখন সিনে কেরিয়ারের মধ্যগগণে। তাই ওই সময় বিয়ে করাটা ঠিক নয়। আর সেকথা সরাসরি অঞ্জন চৌধুরীকে জানিয়েও দেন অভিনেতা। ছেড়ে দেন অঞ্জন চৌধুরীর ১০ টি ছবির অফারও।

চুমকি নিয়ে কী বলেন জয়?

”চুমকি অত্যন্ত ভাল মেয়ে। ওর বাবার ছবি ছাড়া অন্য কোনও ছবিতে কাজ করেনি। খুব ঘরোয়া মেয়ে। চুমকি আমার মা-বাবাকেও খুব ভালবাসত, সম্মান করত। আমরা এক বোন এক ভাই। বোনের বিয়ে আমেরিকায় হয়। আমার মা-বাবার তাই মেয়েকে মিস করত। এই সময় চুমকি বাড়িতে আসত। নানারকম পদ রান্না করে নিয়ে আসত। আমার মা-বাবার খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিল চুমকি।”

Post a Comment

Previous Post Next Post