চাকরি গেল ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়কের, নেপথ্যে কি সেক্স চ্যাটের অডিয়ো ফাঁস?

অ্যাশেজ় সিরিজ়ের আগেই যেন বজ্রপাত! বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক পল কলিংউডকে দল থেকে বের করে দিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ECB)। প্রসঙ্গত তিনি ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ ছিলেন। মেয়েদের সঙ্গে অশালীন কথোপকথনের অডিয়ো ফাঁস হওয়ার পর থেকেই তাঁর জীবনে ঝড়ের পর ঝড়। তার উপর তো কর ফাঁকি সংক্রান্ত কোটি কোটি টাকার মামলায় আইনি জটিলতা রয়েছেই। যার জেরে ECB-ও সম্পর্ক ছিন্ন করল। পল কলিংউডের জন্য নিঃসন্দেহে এটি অপমানজনক বিদায়।

অ্যাশেজ়ে আর কোচিং করবেন না কলিংউড
৪৯ বছর বয়সী পল কলিংউড, যাঁকে একসময় ইংল্যান্ড ক্রিকেটের হৃদয় বলা হতো, ২২ মে ২০২৫-এর পর থেকে তাঁকে আর জাতীয় দলের কোচিং বিভাগে দেখা যাচ্ছে না। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি নটিংহ্যামে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টে দলের সঙ্গে ছিলেন না। এখন ডেইলি মেইলের রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসন্ন অ্যাশেজ় সিরিজের কোচিং দলেও রাখা হচ্ছে না। যদিও ECB তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করেনি।

বিতর্কের শুরু কোথায়?
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে কলিংউড বিতর্কের কেন্দ্রে, যখন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন স্পিনার গ্রেম সোয়ান ‘রিগ বিজ়’ পডকাস্টে ক্রিকেটারদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া একটি অশ্লীল অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের কথা ফাঁস করেন। ফাঁস হওয়া ভয়েস নোটে কলিংউডকে একাধিক নারীর সঙ্গে অশালীন কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। যদিও তদন্ত এখনও চলছে।

আগেও জরিমানা হয়েছিল
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় T20 বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হারের ঠিক আগের দিন, কলিংউডকে কেপটাউনের একটি স্ট্রিপ ক্লাব ‘ম্যাভেরিক্স’-এ দেখা গিয়েছিল। যদিও তিনি দাবি করেন, ক্লাবে ঢুকে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এসেছিলেন, ECB তাঁকে ১০০০ পাউন্ড জরিমানা করে। এটাই একমাত্র ঘটনা নয়, ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ়ে ইংল্যান্ডের লজ্জাজনক হারের পর তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচ করা হয়। কিছু দিনের মধ্যেই বার্বাডোজের একটি সৈকতে এক মহিলাকে চুম্বনরত অবস্থায় তাঁর ছবি প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাটি ঘটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে সিরিজ়ের শেষ টেস্টে ১০ উইকেটে হারের কয়েক দিন পর।

কর ফাঁকির মামলায় বড় ধাক্কা
সম্প্রতি HM Revenue & Customs (HMRC)-এর সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে হেরে গিয়ে কলিংউডকে ১,৯৬,০০০ পাউন্ড (প্রায় ২ কোটি টাকা) কর পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি একটি পার্সোনাল সার্ভিস কোম্পানি ‘PDC Rights’-এর ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, স্পনসরশিপ ডিল থেকে পাওয়া আয়কে কর্পোরেট আয়ের মতো দেখিয়ে কর কমানোর চেষ্টা করেছিলেন তারকা ক্রিকেটার। আদালত রায় দেয়, স্লেজেঙ্গার ও ক্লাইডসডেল ব্যাঙ্কের মতো ব্র্যান্ড থেকে পাওয়া আয়কে ‘স্বনিযুক্ত আয়’ হিসেবে গণ্য করা হবে, কর্পোরেট নয়। কলিংউড এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তাতে হেরে যান।

এই সব বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়ে ২০০৫ সালের অ্যাশেজ় সিরিজের কিংবদন্তি দলের সদস্য এবং ইংল্যান্ডকে প্রথম বার বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক এখন হিরো থেকে জিরো হয়ে গিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ইংল্যান্ড ২০১০ সালে T20 বিশ্বকাপ জিতেছিল।

Post a Comment

Previous Post Next Post