কাটল ছটের জট, রাসবাড়ি ঘাটেই হবে আচার-অনুষ্ঠান, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের


বালি: অবশেষে জট কাটল ছটপুজোর। বালির রাসবাড়ি গঙ্গার ঘাটে বহু বছর ধরে হিন্দি ভাষাভাষী কয়েক হাজার মানুষ ছটপুজোর অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় আচার পালন করে আসছেন। কিন্তু গত কয়েক বছরের মতো, এই বছরও রাসবাড়ির কর্তৃপক্ষ শিবকৃষ্ণ দাঁ দেবোত্তর এস্টেটের পক্ষে ছটপুজো উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের ঘট ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তোলেন। এত মানুষের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছটপুজোয় পুণ্যার্থীদের প্রবেশে আপত্তি জানিয়ে, তাঁরা কলকাতা উচ্চ আদালতে আবেদন করেন।
আদালত তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে, রাসবাড়ির চৌহদ্দিতে প্রবেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আদালতের নির্দেশের ফলে, এত মানুষের ধর্মীয় আচরণ নিয়ে বড় সমস্যার মুখে পড়ে পুলিশ-প্রশাসন। পুণ্যার্থীরাও সমস্যায় পড়েন। তাঁরা অবশেষে কলকাতা উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন। ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি পুণ্যার্থীদের আবেদন বিবেচনা করে, শুধুমাত্র ছটপুজোর দু'দিনের জন্য ঘাট ব্যবহারের অনুমতি দেন। এর ফলে, এই বছরও ফের ছটপুজো নিয়ে জটিলতা দূর হলো।

রাসবাড়ি কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, এত মানুষের ধর্মীয় আচরণের জন্য নিয়ন্ত্রণহীন ভিড় ও ছটপুজোর লোকাচার মেনে, আগুন জ্বালানোর মতো অনুষ্ঠানের ফলে, তাঁদের প্রায় দেড়শো বছরের প্রাচীন মন্দিরগুচ্ছ ও অন্যান্য হেরিটেজ সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে।

কিন্তু আদালত প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, দেবোত্তর সম্পত্তির যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সে জন্য প্রশাসন সেখানে যথাযথ পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষণের বন্দোবস্ত করবে। শনিবার সেই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে গেলেন বালির প্রাক্তন কাউন্সিলার ও হাওড়ার যুব তৃণমূল সভাপতি কৈলাস মিশ্র। তাঁর সঙ্গে দলের অন্য নেতারাও ছিলেন এ দিন। রাসবাড়ি ঘাট ছটপুজো কমিটির পক্ষেও আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানানো হয়েছে। ছটপুজোয় বাধা দূর হওয়ায় খুশি পুণ্যার্থীরাও।

এ দিন কৈলাস বলেন, 'বছরে দু'দিন ছটপুজোর পুণ্যার্থীরা এখানে পুজো করেন। তাঁদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করেন। আমি এই মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, এ ভাবে প্রতি বছর বাধা সৃষ্টি না করে, সবার সহযোগিতায় অনুষ্ঠান যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে, তার জন্য সহযোগিতা করতে। আদালতকেও অনেক ধন্যবাদ, পুণ্যার্থীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে, ছটপুজোর বাধা দূর করার জন্য।' সবাই শান্তিতে ছটপুজোয় অংশ নিন, এই আবেদন জানান তিনি। এ দিন পরে বালির বিধায়ক ও বালি পুরসভার প্রশাসক রানা চট্টোপাধ্যায়ও রাসবাড়ি ঘাট পরিদর্শন করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post