চিকিৎসক দিলীপ মহলানবীশ। কলেরা সহ বহু পেটের রোগে, শরীর থেকে যখন প্রচুর জল বেরিয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা শুরু হয়, তখন ম্যাজিকের মতো কাজ করে এই সলিউশন। ইদানীং বহু সংস্থাই সুস্বাদু, কৃত্রিম স্বাদযুক্ত পানীয়র গায়ে ওআরএসের লেবেল সেঁটে বিরাট ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল। কিন্তু তাঁর গুণমান অনেক ক্ষত্রেই হু-অনুমোদিত ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন’ এর মতো নয়। এইরকম পানীয়কে যাতে ওআরএস বলে না-চালানো হয়, তার জন্য গত ৮ বছর লড়াই চালাচ্ছিলেন চিকিৎসক হায়দরাবাদের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিবরঞ্জনী সন্তোষ। অবশেষে এল জয়। ডঃ শিবরঞ্জনী বলেছেন, "আট বছর ধরে আমি এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি, এবং আমি তা জিতেছি। উচ্চ চিনিযুক্ত কোনও পানীয়ের লেবেলে আর ORS থাকতে পারে না, এবং এখান থেকে তারা একটি পানীয়ও বিক্রি করতে পারবে না। এটি বাবা-মায়ের জন্য, শিশুদের জন্য, মানুষের জন্য একটি জয়"।
বিপক্ষে তাবড় তাবড় হেভওয়েট বহুজাতিক সংস্থা থাকলেও অবশেষে জিত হল চিকিৎসকের দাবির। এখন আর হু-অনুমোদিত ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন’ছাড়া অন্য কোনও পানীয়কে কে ওআরএস নাম দিয়ে বিক্রি করা যাবে না। কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা ও গুনমান দফতর (এফএসএসএআই) অবশেষে নিল কড়া পদক্ষেপ। দেওয়া হল গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, হু-র অনুমোদন ছাড়া এখন থেকে কোনও খাদ্যপণ্যের গায়ে ওআরএস শব্দটি রাখা যাবে না। সেই সঙ্গে এ ধরনের সমস্ত পানীয় সরিয়ে ফেলতে হবে বাজার থেকে।
চিকিৎসকের অভিযোগ, অনেক কোম্পানি "ওআরএস" শব্দটির অপব্যবহার করে বেশি চিনিযুক্ত পানীয়কে ওআরএস বলে বিক্রি করে মুনাফা লুটছে। এর একমাত্র সমাধানই হল এই সব প্রোডাক্টকে বাজার থেকে সরিয়ে ফেলা। সেই সঙ্গে ওআরএস-নামের অপব্যবহার আটকানো। ডাঃ সন্তোষের মতে. এ ধরনের চিনিযুক্ত সুস্বাদু পানীয়গুলো ডায়রিয়া রোগীর অবস্থা আরও খারাপ করবে। বিশেষ করে শিশুদের এতে বিপদ বেশি। ভারতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর মধ্যে ১৩%হয় ডায়াবিরায় আক্রান্ত হয়ে। এই সিদ্ধান্তকে "বিশাল স্বস্তি" বলা হয়েছে। ডঃ সন্তোষ বলেন, এই পদক্ষেপ জীবন বাঁচাবে। বছরের পর বছর ধরে চলা প্রতারণামূলক লেবেলিং এবং অনৈতিক বিপণনের অবসান ঘটাবে। FSSAI সমস্ত খাদ্য ব্যবসায়ীকে পণ্যের নাম, লেবেল এবং বিজ্ঞাপন থেকে "ORS" শব্দটি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। সতর্ক করে বলা হয়েছে, এ নির্দেশের অমান্য হলেই খাদ্য সুরক্ষা আইন, ২০০৬ এর অধীনে শাস্তি দেওয়া হবে। এই নির্দেশকে "বিশাল স্বস্তি" বলেছেন ডঃ শিবরঞ্জনী।