দেশের পাঁচ রাজ্য — পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, অসম ও পুদুচেরিতে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। ৭ কোটি ৬৪ লক্ষ ভোটারের বাংলায় আজই শুরু হচ্ছে বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও–দের সার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ। প্রাথমিক ভাবে ১০–১৫টি রাজ্যে সার শুরু হওয়ার কথা। আজকের সাংবাদিক বৈঠকে এ সংক্রান্ত যে তালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা আছে, তাতে ওই পাঁচ রাজ্যের নামও থাকবে বলে খবর। ধাপে ধাপে বাকি স্টেটে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে৷
আবার, পূর্বনির্ধারিত স্থানীয় ভোটগুলি মিটে গেলে সার শুরু হোক বলে কমিশনে আবেদন জানিয়েছে মহারাষ্ট্র৷ কমিশন সে আর্জিতে সাড়া দেয় কি না সে দিকে নজর থাকবে সংশ্লিষ্ট মহলের। বিহারে সার-এর ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ১১টি নথির যে কোনও একটি চেয়েছিল কমিশন। বাংলা–সহ অন্যান্য রাজ্যে কোন নথিগুলি গ্রাহ্য হয়, তা নিয়েও রয়েছে কৌতূহল।
কমিশন সূত্রে খবর, আজ দিন ঘোষণা হলে কাল, মঙ্গলবারই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে পারেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)–রা। একই সঙ্গে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং ইলেক্টোরাল রোল অফিসার (ইআরও)–রা জেলা ও বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক সর্বদলীয় বৈঠক করবেন স্থানীয় ভাবে।
বিহার থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০০২–এর ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান লিস্টের কতগুলি নাম ‘ম্যাচ’ করছে, তার ভিত্তিতে ম্যাপিংয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে ইসিআই। বাংলার সব জেলায় এই কাজ শেষ হলেও সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে বাকি আছে। এই দুই জেলা বাদে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত গড়ে ৫২ শতাংশ ভোটারের নাম ম্যাচ করেছে। মগধ–ভূমের ‘সার’ নিয়ে কম শোরগোল, বিতর্ক হয়নি।
বিরোধীদের অভিযোগ, বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দিয়েছে কমিশন। কমিশন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়–সহ জোড়াফুলের শীর্ষ নেতৃত্বও এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। শীর্ষ কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, অনিয়ম প্রমাণিত হলে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হবে।
জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে প্রত্যেক ভোটারের ছবি–সহ এনুমারেশন ফর্মের সফট কপি ইআরও–দের পাঠাবে কমিশন। স্থানীয় স্তরে ফর্মের দু’টি করে প্রিন্ট আউট নেওয়া হবে, যার বন্দোবস্ত করবেন জেলাশাসক। ভোটারদের প্রত্যেকের এনুমারেশন ফর্মও আলাদা। ১ বা ২ নভেম্বর থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি সেগুলি পৌঁছে দেবেন বিএলও–রা। বর্তমানে ভোটার তালিকায় নাম থাকা সকলেই এই ফর্ম পাবেন, যেমনটা হয়েছে বিহারে।
সেখানে ভোটদাতার এপিক নম্বর, নাম, ঠিকানা, ছবি, জন্মতারিখ-সহ ৯০ শতাংশ তথ্যই ছাপা থাকবে। ভোটারকে দিতে হবে নিজের একটি রিসেন্ট ছবি। এ বাদে নির্দিষ্ট অংশ পূরণ করে নথি-সহ একটি ফর্ম জমা দিতে হবে বিএলও–দের কাছে, অন্যটি থাকবে সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছে। প্রয়োজনে ফর্ম পূরণে সাহায্য করবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। স্কুল বা কোনও সরকারি দপ্তরে কর্মরত স্থায়ী শিক্ষক, কর্মীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগও করছে কমিশন।