বর্ষাকালে ঢাকার রাস্তা ও শহরের সড়কগুলো যেন পরিণত হয় বিশাল জলাবদ্ধতায়। বৃষ্টির মাত্রা একটু বাড়লেই জল জমে যায় রাস্তায়, চলাচল দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, নগরীর প্রধান সড়কগুলো, উপকণ্ঠের ছোট বড় রাস্তা—সব কিছুরই একই দশা। তীব্র যানজট, পানি জমে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা—এসব এখন এক ধরনের নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে নগরের সড়কগুলোর অব্যবস্থাপনা ও অযত্নে সৃষ্ট দুরাবস্থা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন দেশের উচ্চ আদালত। সম্প্রতি হাইকোর্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বর্ষাকালে এই ধরনের সমস্যার সমাধান নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতের নির্দেশনা:
বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানা গেছে, হাইকোর্ট বর্ষাকালে ঢাকার সড়কগুলোর পানিতে ডুবে যাওয়ার সমস্যার বিষয়ে একটি রিট পিটিশনের শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এর দায়-দায়িত্ব এবং সমাধান নিয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে। আদালত এই পরিস্থিতি কেন ঘটছে, এবং এই সমস্যার সমাধান করতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছে।
এছাড়া, আদালত সড়ক উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা, সড়ক সংস্কার ও বৃষ্টি-পানি নিষ্কাশনের কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েছে।
নগর পরিকল্পনা ও সড়ক সমস্যার পেছনে কারণ:
ঢাকা শহরের সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে বহুদিন ধরে নানা অভিযোগ উঠেছে। একদিকে সড়কের প্রশস্ততা, অন্যদিকে অব্যবস্থাপনা, অবৈধ দখল, খারাপ মানের নির্মাণ কাজ—এসবই এর অন্যতম কারণ। বিশেষত বর্ষাকালে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, যা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এবং মানুষের ভোগান্তি বাড়ায়।
শুধু ঢাকা শহরই নয়, দেশের বিভিন্ন শহরে এ সমস্যা প্রকট। রাস্তা সংস্কারের কাজ সঠিকভাবে না হওয়া, যথাসময়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা—এসব নানা কারণে প্রতিবার বর্ষায় রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জনগণের প্রতিক্রিয়া:
এ পরিস্থিতিতে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিকরা অভিযোগ করছেন, সড়কগুলোর দুরবস্থার ফলে প্রতিদিনই যানজট এবং ভোগান্তির মুখে পড়ছেন তারা। বর্ষা শুরু হলেই সাধারণ মানুষের মনে একই চিন্তা, ‘‘কখন আবার রাস্তা ডুবে যাবে, কখন আবার যানজট হবে, কবে শেষ হবে এই দুর্ভোগ?’’
এ বিষয়ে এক নাগরিক বলেন, ‘‘বর্ষাকালে সড়ক ও রাস্তায় পানি জমে গিয়ে অনেক সময় রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। এর ফলে কর্মস্থলে যেতে বা জরুরি কাজে বের হতে সমস্যা হয়।’’