এ বছরও বর্ষার মরসুমে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ। গত ২০ জুন থেকে বর্ষার জেরে বিভিন্ন ঘটনা, দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯৮ জন। হিমাচল প্রদেশের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ (এসডিএমএ) জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে ধস, হড়পা বান, বাড়ি ভেঙে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫২ জন। আর ২০ জুন থেকে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৬ জন। ওই দুর্ঘটনার জন্যও পরোক্ষ ভাবে দায়ী ভারী বর্ষণই। মৌসম ভবন বলছে, সে রাজ্যে এখনই কমছে না বৃষ্টি। প্রায় সাতটি জেলার কিছু অংশে ৩০ অগস্ট পর্যন্ত হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, হিমাচলের বিলাসপুর, হামিরপুর, কাংড়া, কিন্নর, কুল্লু, মাণ্ডি, সিমলা, সোলান, উনা, সিরমোরে সোমবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মাণ্ডি, কুল্লু, উনা, চাম্বা, কাংড়ার সব স্কুল সোমবার বন্ধ রাখা হয়েছে। ধস নামার কারণে রবিবারও হিমাচলের দু’টি জাতীয় সড়ক-সহ ৪৮২টি সড়ক বন্ধ ছিল। তার মধ্যে মাণ্ডিতেই বন্ধ ২৪৫টি সড়ক। কুল্লুতে বন্ধ ১০২টি সড়ক। ১৫৪এ জাতীয় সড়ক (চাম্বা-পঠানকোট) এবং ৩০৫ নম্বর জাতীয় সড়ক (উত-সাইঞ্জ)-ও বন্ধ রয়েছে। জাতীয় সড়কের কিছু অংশে ধস নামার কারণে, কিছু অংশে জল জমার ফলে বন্ধ করা হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। ৯৪১টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার কাজ করছে না। বিভিন্ন এলাকায় জলও পৌঁছোয়নি।
শনিবার রাত থেকে হিমাচলের বিভিন্ন অংশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পাণ্ডোতে। সেখানে ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মাণ্ডি, কাসৌলিতেও ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের পরিসংখ্যান বলছে, ২০ জুন থেকে হিমাচলে বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় ১৫৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৩৭ জনের কোনও খোঁজ মেলেনি। ৭৭টি হড়পা বান, ৪০টি মেঘভাঙা বৃষ্টি, ৭৯টি ধস নামার ঘটনা হয়েছে সেখানে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ২,৩৪৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১ জুন থেকে ২৪ অগস্ট হিমাচলে গড়ে ৬৬২.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে স্বাভাবিক ভাবে গড়ে ৫৭১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা। ওই সময়ে স্বাভাবিকের থেকে ১৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।