পুতিনকে খুশি করার তাগিদ? যুদ্ধে বিশেষ এক ধরনের অস্ত্র প্রয়োগ করতে চাইছে ইউক্রেন, ঠেকিয়ে রেখেছে আমেরিকাই!


রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ এক ধরনের অস্ত্র প্রয়োগ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইউক্রেন। শুধু আমেরিকার জন্য এখনও তা সম্ভব হয়নি। আমেরিকায় তৈরি ওই অস্ত্র ইউক্রেনকে ব্যবহারের অনুমতি এখনও দেয়নি পেন্টাগন। হোয়াইট হাউস সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

ইউক্রেনের হাতে আছে আমেরিকার তৈরি ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম’ (এটিএসিএমএস)। এটি দীর্ঘ পাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যা ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিখুঁত ভাবে নিশানা করতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগে ইউক্রেনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে আমেরিকা। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের খবর, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অন্তত এক বার ইউক্রেনের সেনা এটিএসিএমএস ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল। মার্কিন আধিকারিকরা তা খারিজ করে দেন।

কেন এই নিষেধাজ্ঞা?

সরকারি ঘোষণা না হওয়ার ফলে এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের কর্তারা মুখ খুলতে নারাজ। তবে মনে করা হচ্ছে, আপাতত ক্রেমলিনকে চটাতে চাইছে না ওয়াশিংটন। সেই কারণে সাবধানে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিছু দিন আগে আলাস্কায় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠক ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে বলেও দাবি। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যদি আমেরিকার দেওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করত, তবে পুতিনের কাছে আমেরিকার মনোভাব সম্পর্কে ভুল বার্তা যেতে পারত।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পদক্ষেপগুলি খতিয়ে দেখার জন্য মার্কিন সরকার নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে। পেন্টাগনের আন্ডারসেক্রেটারি ফর পলিসি এলব্রিজ কোলবাই চালু করেছেন একটি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া। আমেরিকায় তৈরি কোন অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে কিভ, তা পর্যালোচনা করা হয় এর মাধ্যমে। ইউক্রেন থেকে এই সংক্রান্ত কোনও অনুরোধ এলেও খতিয়ে দেখা হয়। সব দিক বিবেচনা করে পেন্টাগন সবুজ সঙ্কেত দিলে তবে তা প্রয়োগ করতে পারে কিভ। এখানেই শেষ নয়, ইউরোপের যে সমস্ত বন্ধু দেশ আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যে ভরসা রাখে, তাদের দেওয়া অস্ত্রের ক্ষেত্রেও ইউক্রেনের উপর নজরদারি চালাচ্ছে পেন্টাগন। কোন অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে শেষ কথা বলেন মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথ।

তবে এ সব ভিতরের কথা। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু বলতে চায় না ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব ক্যারেলিন লিভিট বলেছেন, ‘‘একটা বিষয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম থেকে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দরকার। এই মুহূর্তে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সামরিক অবস্থানে কোনও পরিবর্তন নেই। সেক্রেটারি হেগসেথ প্রেসিডেন্টের নির্দেশে তাঁর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন।’’ ইউক্রেনের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। নীরব পেন্টাগনও।

Post a Comment

Previous Post Next Post