টিআই প্যারেডে ধৃত ৫ জনকেই শনাক্ত করলেন দুর্গাপুরের নির্যাতিতা, সহপাঠীই ‘মূলচক্রী’ দাবি আইনজীবীর


দুর্গাপুর: একবার দেখেই ধৃত পাঁচ যুবককে শনাক্ত করলেন দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক‌্যালের ডাক্তারি ছাত্রী। তবে টিআই প‌্যারেডে সহপাঠীকে রাখা হয়নি। কারণ, ছাত্রীর সহপাঠী তিনি, তাঁকে তো আগে থেকেই চিনতেন। শুক্রবার আদালতের নির্দেশে ধর্ষণ-কাণ্ডে টিআই প্যারেড হয় দুর্গাপুর উপ-সংশোধনগারে। সেখানে তিনি ওই বেসরকারি মেডিক‌্যাল সংলগ্ন এলাকার ধৃত পাঁচ যুবককে শনাক্ত করেন। এই ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ সহপাঠী ওয়াসেফ আলিই বলে দাবি করেন নির্যাতিতার আইনজীবী পার্থ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, ১০ অক্টোবর দুর্গাপুর আইকিউ সিটি হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি ছাত্রী তাঁর সহপাঠীর সঙ্গে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ। এরপর প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় মেডিক‌্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকার পাঁচ যুবককে। গ্রেপ্তার করা হয় সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকেও। গত বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক টিআই প‌্যারেডের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ ওড়িশার বাসিন্দা ওই ছাত্রী ও তাঁর মাকে নিয়ে উপ-সংশোধনাগারে পৌঁছ। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আসেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক রাজীব সরকার। তারপর টিআই প্যারেড প্রক্রিয়া শুরু হয়।

সংশোধনাগার সূত্রের খবর, এদিন ধৃত পাঁচ যুবক ছাড়াও আরও তিনজনেকে ‘ডামি’ হিসাবে রাখা হয়েছিল। প‌্যারেডে দেখামাত্রই পাঁচ যুবককে শনাক্ত করেন ছাত্রী। মাত্র পাঁচ মিনিটেই এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। পুরো প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করা হয়। সূত্রের খবর, ঘটনার দিন জঙ্গলে মোবাইলের আলোতে সব অভিযুক্তকেই দেখেছিলেন ওই ছাত্রী। এরপর উপ-সংশোধনগার থেকে নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ নির্যাতিতা ও তাঁর মাকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। আগামী সোমবার ফের ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। ওই দিনই পেশ করা হবে টিআই প্যারেডের রিপোর্ট। উল্লেখ‌্য, এই মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে বিভাস চট্টোপাধ‌্যায়কে।

এদিকে ডাক্তারি ছাত্রীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ দাবি করেছেন, ধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত সহপাঠী ছাত্র ওয়াসিফ আলির পূর্বপরিচিত গ্রামের পাঁচ যুবক। বিজড়া গ্রামে নিয়মিত যাতায়াত ছিল সহপাঠীর। আইকিউ সিটি মেডিক‌্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের পিছনের গেট থেকে নিকটবর্তী ফুচকার দোকান প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু মূল গেট দিয়ে বের হলে সামনেই ফুচকার দোকান।

নিউ টাউনশিপ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের বাসিন্দা ডাক্তারি পড়ুয়া নিয়মিত বিজড়া গ্রামে যেতেন ধর্মীয় কাজে। সেখানে প্রথম এই কাণ্ডে ধৃত শেখ ফিরদৌসের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। ফিরদৌসের মাধ্যমেই এই ঘটনায় ধৃত বিজড়া গ্রামের বাকিদের সঙ্গে আলাপ। সহপাঠী কেন সঙ্গে কন্ডোম নিয়ে গিয়েছিলেন?  এই ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ সহপাঠী ওয়াসেফ আলিই বলে দাবি করেন নির্যাতিতার আইনজীবী পার্থ ঘোষ।



Post a Comment

Previous Post Next Post