চিনা মাফিয়াদের অন্ধকার দুনিয়ায় বর্মী সেনার ‘অপারেশন’! প্রাণরক্ষায় খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপ কয়েক ডজন ভারতীয়ের, তার পর...


গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়ছে সাবেক ব্রহ্মদেশ। সেই অরাজকতার সুযোগে চিনা মাফিয়াদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে আরাকানভূমি। পূর্বের প্রতিবেশী দেশটিতে বসে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে পাচার হয়ে আসা ব্যক্তিদের দিয়ে সাইবার অপরাধের বিরাট এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে তারা। বিষয়টি নজরে আসতেই টনক নড়ে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের। ফলস্বরূপ শুরু হয়েছে সেনা অভিযান এবং ব্যাপক ধরপাকড়। এর জেরে ভারত থেকে পাচার হওয়া নাগরিকদের দেশে ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

চলতি বছরের ২২ অক্টোবর গভীর রাতে মায়ানমারের কুখ্যাত মায়াওয়াডি এলাকার কে কে পার্কে আচমকাই সেনা অভিযান চালায় জুন্টা সরকার। চিনা মাফিয়া পরিচালিত একটি চত্বরে ঢুকে পড়ে তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সময়ে সেখান ছিলেন পাচার হয়ে আসা প্রায় ৭০০ বিদেশি নাগরিক। জুন্টার সৈনিকেরা ‘অপারেশন’ শুরু করতেই সেখান থেকে চম্পট দেন তাঁরা। পলাতক বিদেশিদের মধ্যে ভারতীয়ের সংখ্যা কয়েক ডজন বলে জানিয়েছে বর্মা মুলুকের একাধিক সংবাদমাধ্যম।

অন্য দিকে প্রতিবেশী তাইল্যান্ডের বেতার স্টেশন ‘তাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস’ আবার জানিয়েছে, বর্মী ফৌজের অভিযানের সময়ে প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে পার্শ্ববর্তী মোই নদীতে ঝাঁপ দেন বিদেশি নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সাঁতরে তাইল্যান্ডে আসতে পেরেছেন। বাকিদের ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে নদীর খরস্রোত। যদিও পাচার হওয়া বিদেশিদের মোট ক’জন নদীতে ডুবে মারা গিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। নিহতদের মৃতদের উদ্ধার হয়েছে কি না, তা-ও জানা যায়নি।

এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে ব্যাঙ্ককের সরকার এবং ফৌজ। সেখানে বলা হয়েছে, মায়ানমারের কে কে পার্ক থেকে পালিয়ে মোট ৬৭৭ জন তাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের তাক প্রদেশে ঢুকে পড়েন। এঁদের মধ্যে ৬১৮ জন পুরুষ এবং ৫৯ জন মহিলা। সকলকে আটক করেছে সেনা ও স্থানীয় প্রশাসন। ধৃতদের বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, জুন্টা বাহিনীর অভিযানের সময়ে গা ঢাকা দিতে মায়ানমারের মায়াওয়াদির আশপাশের এলাকাকে বেছে নিয়েছেন তাঁরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post