বিস্ফোরক মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল, এবার ডাকাবুকো বিধায়কের বিরুদ্ধেই আসরে দলীয় নেতৃত্ব, ২৬-এর ভোটের শাসক শিবিরে প্রবল সংকট


বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের লাগাতার দলবিরোধী মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার ও কান্দি পৌরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন হুমায়ুন কবির। এমনকি তিনি দলের আসন সংখ্যা ২০ থেকে ১০টি আসনে নামিয়ে আনার হুশিয়ারিও দেন এবং কান্দি বিধানসভা থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেন। এই বিতর্ক ঘিরে রবিবার দুপুরে কান্দির নারায়ণ ধার পার্ক গেস্ট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দিলেন কান্দি টাউন তৃণমূল নেতৃত্ব।

এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক, কান্দি টাউন তৃণমূল সভাপতি দেবল দাস এবং পৌর সদস্য দেবাশিস চ্যাটার্জী। সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সভাপতি দেবল দাস বলেন, “২০২১ সালে হুমায়ুন কবির জয়ী হলেও আজ পর্যন্ত তিনি এলাকার কোনও উন্নয়ন করেননি। শুধু গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জড়িয়ে দলকে দুর্বল করেছেন। এখন আবার তিনি কান্দি বিধানসভা থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা বলছেন। আমরা চাই, তিনি এসে একটি সভা করে সেটা প্রমাণ করুন।”

পৌর সদস্য দেবাশিস চ্যাটার্জীও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মন্ত্রীত্বের লোভে ২০১২ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন হুমায়ুন কবির। গত সাড়ে চার বছরে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। সালারকে পৌরসভা করার কোনও উদ্যোগ নেই, ভরতপুরে গার্লস স্কুলের দাবি তোলা হয়নি, এমনকি বিধায়ক তহবিলের টাকায় কোথায় কী কাজ হয়েছে তা নিয়েও কোনও তথ্য নেই। মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হলেও তা ব্যবহার হচ্ছে না। অথচ তিনি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েই ব্যস্ত।”

কান্দি পৌরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক বলেন, “বিধায়ক হুমায়ুন কবির আমার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই বিধানসভায় তৃণমূলই জয়ী দল। শহরে তৃণমূল দ্বিতীয় স্থানে ছিল, কিন্তু লোকসভা ভোটের সময় বিধায়কের মন্তব্যের জেরেই ভোটে ক্ষতি হয়। দলীয় নেতৃত্ব নিশ্চয়ই তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

কান্দি তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিধায়কের লাগাতার দলবিরোধী কার্যকলাপ ও বিভাজনমূলক মন্তব্যে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাঁরা হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post