খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত, বৃক্ষরোপণ করিয়ে সাজা স্থগিত! হাইকোর্টের রায়ে বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট


নয়াদিল্লি: খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত। অথচ বৃক্ষরোপণের বিনিময়ে সাজা স্থগিত, জামিন মঞ্জুর? মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের রায়ে স্তম্ভিত সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কী করে এমন রায় দেওয়া হল, প্রশ্ন তুললেন বিচারপতিরা।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার এজলাসে ওই মামলা ওঠে। জানা যায়, ২০২৩ সালে একটি খুনের মামলায় দায়রা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় দুই জন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ও ৩৪১ (অন্যায় ভাবে কাউকে আটকে রাখার শাস্তি) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাদের। (Madhya Pradesh High Court)

কিন্তু পরবর্তীতে ওই দু’জনের সাজা স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট। জামিন মঞ্জুর করে শর্ত হিসেবে বলা হয়, সমাজসেবা করে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে তাদের।  সেই মতো দোষী সাব্যস্ত দু’জনকে ১০টি করে লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বলা হয়, ৬-৮ ফুট উচ্চতার ১০টি করে গাছ লাগাতে হবে ওই দু’জনকে।৩-৪ ফুট করে গর্ত খুঁড়তে হবে তার জন্য। মুক্তি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সেই ছবি তুলে জমা দিতে হবে। ওই গাছ কী অবস্থায় আছে, নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে হবে তা নিয়ে। গাছ বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে জামিন বাতিল হবে।

হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টের। খুনের মামলায় অপরাধ যেখানে প্রমাণিত, সেখানে গাছ লাগিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে বলা যায় কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবেদনকারী। গতকাল সেই নিয়ে শুনানি করতে গিয়ে হতবাক হয়ে যান বিচারপতিরাও।

শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কুমার প্রশ্ন করেন, “সাজা বাতিল করে বিচারপতি গাছ লাগাতে বলেন? এটা কী ধরণের কাজ? ওই নির্দেশ খারিজ করে বিষয়টি ফেরত পাঠালাম আমরা। সাধারণত এসবে হস্তক্ষেপ করি না আমরা। কিন্তু হাইকোর্ট কী কারণ দেখিয়েছে দেখুন। হিন্দিতে কিছু লেখা হয়েছে, আড়াই প্যারাগ্রাফ। জামিনের কারণ হতে পারে এটা? এটা কী?”

হাইকোর্ট এমন নির্দেশ দিল কী করে, সেই নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। “দুই তরফের সওয়াল শুনে আমরা জানতে পেরেছি, যাবজ্জীবনের সাদা হয়েছিল। সেই সঙ্গে একমাসের সশ্রম কারাদণ্ড তাতে ব্যর্থ হলে যথাক্রমে ১০ হাজার ও ৫০০ টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু জামিন দেওয়া হল কী করে, তার যুক্তিযুক্ত কারণই তো নেই! গাছ লাগানোর যে শর্ত দিয়েছে হাইকোর্ট, তাতে আমরা হতবাক, বিস্মিত। আইন অনুযায়ী, এক সেকেন্ডের জন্যই এই ভাবনা আসতে পারে না।”

দোষী সাব্যস্ত ওই দুই ব্যক্তির জামিন যদিও বাতিলের নির্দেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তবে হাইকোর্টে বিষয়টি ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাতে ফের শুনানি


Post a Comment

Previous Post Next Post