প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফরকে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে পুজোর ছুটি কাটানো এবং সম্পূর্ণটাই রাজনৈতিক স্বার্থচরিতার্থ করার পরিকল্পনা বলে তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা ৷
বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন শুভেন্দু । সেখান থেকে সড়কপথে নাগরাকাটার উদ্দেশ্যে রওনা দেন । মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর ত্রাণ বিলির সময় আক্রমণের ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেবেন তিনি । পাহাড়ের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি ওড়িশার নির্যাতিতা ছাত্রীর প্রসঙ্গেও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা ।
এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এ রাজ্যে মা-বোনেরা সুরক্ষিত নন । তবে আমরা চাই, পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে চার্জশিট জমা দিয়ে ফাস্ট ট্রাক কোর্টে মামলা দায়ের করা হোক ৷ সংবিধান অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করুক ।"
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় সম্পর্কে কটাক্ষ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এখন পুজোর ছুটি চলছে । তাই মুখ্যমন্ত্রী ঘুরতে এসেছেন । আমি পাহাড়ে গিয়েছিলাম । নিজের চোখে দেখেছি পাহাড়ের মানুষ কত কষ্টে রয়েছে । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তাঁদের বাড়ি চলে গিয়েছে । সেখানে তাদের আর পুনর্বাসন দেওয়া সম্ভব নয় । দল দিক, জিটিএ দিক, সাংসদ বা বিধায়ক দিক বা যেই দিক । সেখানে আর পুনর্বাসন দেওয়া সম্ভব নয় । ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তত অন্য জায়গায় দু'কাঠা বা 5 ডেসিবেল করে জায়গা দেওয়া উচিত । আর পাহাড়ে সমতলের মতো বাড়ি হয় না । এখানে একটু জায়গা লাগে । তাই ওই এক লক্ষ 20 হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি হবে না । ন্যূনতম কাঠ এবং দিয়ে বাড়ি করতে গেলেও অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা প্রয়োজন । এটা রাজ্য সরকার করতে পারেনি আর করবে না । সেজন্য বিজেপিকে ক্ষমতায় আনুন । আমরা পাহাড়ের এই সমস্যাকে স্থায়ী সমাধান করব ।"
তিনি সংযোজন করে আরও বলেন, "কেন্দ্র ও রাজ্য মিলে এই বিষয়টি দেখা উচিত ছিল । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কাজ করেছেন বলে আমি জানি না । তিনি মিরিকে ত্রাণ শিবিরে আচমকা গিয়েছেন । আগের থেকে সেখানে সব সাজানো-গোছানো ছিল । আর যে প্রশাসনিক বৈঠক তিনি করেছেন সেখানে পাহাড়ে ভূমিধস, পানীয় জল ব্যবস্থা, ট্রাফিক সেফটি এসব নিয়ে কোন আলোচনা করেননি । তাই মুখ্যমন্ত্রী এখানে বেড়াতে এসেছেন । দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের আগে খুব তৎপরতা দেখাতে এসেছেন । তাঁর যে সংবিধান প্রদত্ত রাজধর্মের পালন সেটা তিনি করতে আসেননি । তবে এখানে তিনি কোন ভোট পাবেন না । তাঁর ভোট ব্যাঙ্ক খালি মুসলমান । বাকি কেউ তাকে ভোট দেবে না ।"
অন্যদিকে, সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের ঘটনায় আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ওই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এর আগে পুলিশ যাদেরকে গ্রেফতার করেছিল তার সম্পূর্ণটাই লোক দেখানো । সংবাদমাধ্যমে নিজেদের চরিত্র ঠিক রাখা । পাশাপাশি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং তপশিলি উপজাতি কমিশনের তরফে যে রিপোর্ট রাজ্যের কাছে চেয়ে পাঠানো হয়েছে সেখানে নিজেদের ছবি ঠিক রাখা । তবে এফআরআইয়ে যাদের নাম রয়েছে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, দেখতে হবে ।"