ইতিমধ্যেই হাওড়া, হুগলি ও মেদিনীপুরের একাধিক ফুলচাষ অঞ্চল থেকে জানা যাচ্ছে, চাহিদা অনুযায়ী ফুল তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কালীপুজোর আগে ফুলের পাইকারি ও খুচরো বাজারে বাড়বে দাম। হাওড়া জেলার বাগনান ব্লকের দামোদর ও রূপনারায়ণের চরে প্রায় পাঁচ হাজার ফুলচাষি বছরের পর বছর ফুল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
এখানকার দেউলটির ওড়ফুলি অঞ্চল, হেলেদীপ, নাচক, ঘোড়াঘাটা, মাকড়দহ, খানজাদাপাড়া, বীরপুর এবং কাঁটাপুকুর গ্রামগুলিতে সারা বছর ধরেই ফুলচাষ চলে। তবে উৎসবের মরশুমে, বিশেষ করে কালীপুজোর আগে, ফুলের চাহিদা বাড়ে বহুগুণ। এই সময়েই চাষিদের ঘরে আসে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ। কিন্তু এ বছর সেই উৎসবের আনন্দে ধাক্কা দিয়েছে প্রকৃতি।
চাষিরা জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহে টানা বৃষ্টিপাত ও হঠাৎ ঠান্ডা পড়ে যাওয়ায়, জবা গাছের গোড়ায় জল জমে যায়। ফলে, গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে, অনেক গাছের পাতা পচে গিয়েছে এবং কুঁড়ি অবস্থাতেই বহু ফুল ঝরে পড়েছে। তার উপরে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায়, পোকামাকড়ের আক্রমণও দেখা দিয়েছে বহু বাগানে। এ সব কারণে এ বছর জবা ফুলের ফলন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে।
চাষিদের অনুমান, এ বার পাইকারি বাজারে ১০৮ জবা ফুলের মালার দাম উঠতে পারে ১১০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরো বাজারে তা বিক্রি হতে পারে ১৫০ টাকা বা তারও বেশি দরে। গত বছর যেখানে একই মালা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, সেখানে এ বছরের দাম অন্তত ৩০–৪০ শতাংশ বেশি হতে পারে।
শুধু জবা নয়, অপরাজিতা, দোপাটি, গাঁদা ও রজনীগন্ধার মতো অন্যান্য ফুলের দামও কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। কারণ, টানা বৃষ্টিতে তাঁদের খেতের মাটি নরম হয়ে গিয়ে গাছ পড়ে গিয়েছে, অনেক খেতেই নতুন চারা রোপণ করা যায়নি। তবুও আশা ছাড়ছেন না চাষিরা।