এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের কাছে ছবি তোলার জন্য আইফোন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আত্মীয় ফোন তো দেননি উল্টে অপমান করেছিলেন। এরপরেই কর্ণাটকের বাসিন্দা কুরাপতি অজয় পণ করেন নিজের শখ মেটাতে সব রঙের আইফোন কিনবেন। এরপর সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে গত দু’বছরে ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি ‘উপার্জন’ করার টার্গেট নেন অজয়। ওই টাকায় ১৫টি আইফোন কিনেছিলেন বছর ৩১–র যুবক। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে টাকা বিনিয়োগ না করে কেন এত ফোন কিনেছিলেন ওই যুবক? পুলিশ সূত্রে খবর, ওই আত্মীয়ের কাছে নিজেকে জাহির করার জন্য এই ফন্দি বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তবে, ওই দাবি কতটা ঠিক তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অজয়ের নামে ১৩টি রাজ্যে ২৫টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিধাননগর ছাড়াও কর্নাটক, সিকিম, রাজস্থান, হরিয়ানা ও অসম–সহ বিভিন্ন রাজ্যে দায়ের হয়েছে এই অভিযোগ। ধৃতকে জেরা করে বিধাননগরের গোয়েন্দারা আর জানতে পেরেছেন, অজয় গেস্টহাউস এবং হোটেলে নিরীহ ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতেন। পরে সুযোগ বুঝে মূল্যবান জিনিসপত্র ও অর্থ আত্মসাৎ করে চম্পট দিতেন। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে জাল নথিপত্র তৈরি ও বিভিন্ন ছদ্মনামও ব্যবহার করতেন। মূলত আধার কার্ডের নম্বর বদলেই তৈরি হতো নতুন পরিচয়পত্র। পরে সেই পরিচয়পত্রকে কাজে লাগিয়ে নতুন সিম তুলতেন তিনি। এ ভাবে বিভিন্ন নামে তুলেছিলেন প্রায় ৪০টি সিম কার্ড।
তদন্তে উঠে এসেছে, বছর আটেক আগে বেঙ্গালুরুর একটি সাইবার প্রতারণার গ্যাং–এ যোগ দিয়েছিলেন অজয়। সেই দলের সদস্যদের কাছে সাইবার প্রতারণার হাতেখড়ি হয় তাঁর। তবে কারও অধীনে কাজ করা শুরু থেকেই অপছন্দ ছিল অজয়ের। ওই দলের সঙ্গে বছর চারেক কাজ করার পরেই বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা থেকে ১ বছরের এথিক্যাল হ্যাকিংয়ের কোর্স করে ফেলেন তিনি। আর ওই কোর্সের সুবাদেই সাইবার প্রতারণায় দক্ষ হয়ে ওঠেন। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন,‘এখনও পর্যন্ত অজয়ের কোনও সঙ্গীর খোঁজ মেলেনি। অন্য রাজ্যের পুলিশের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করেছি।’ এ রাজ্যে কারা অজয়ের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা।